• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নিজের জীবনই শুধু তার কাছে খুব তুচ্ছ ছিল


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৪, ২০২১, ০২:১৫ পিএম
নিজের জীবনই শুধু তার কাছে খুব তুচ্ছ ছিল

ঢাকা : আগস্ট বাঙালির হৃদয়ে দীর্ঘশ্বাসের নাম। এ মাসেই বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ওই হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা পৃথিবীর যেকোনো হত্যাকাণ্ডকে হার মানায়।

নানা ঘটনা প্রবাহ আর ব্যথাতুর স্মৃতিতে বাঙালি জীবনে আবারও এসেছে আগস্ট। সেই শোকাবহ আগস্টের চতুর্থ দিন আজ। ১৯৭৫ সালের ৪ আগস্ট ছিল সোমবার।

কোনো বাঙালি জীবনের হুমকি হতে পারে, এটা কখনো ভাবেননি বঙ্গবন্ধু। এ কারণে বাড়তি নিরাপত্তার ধার ধারেননি। সুরক্ষিত রাষ্ট্রপতির বাসভবন ছেড়ে বসবাস করতেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে।

কিন্তু রাতের আঁধারে ওই বাড়িতে পৈশাচিক পন্থায় হামলা চালায় দিকভ্রান্ত কিছু সেনা কর্মকর্তা। বুলেটের আঘাতে ওরা কেড়ে নেয় একের পর এক প্রাণ। পাষণ্ডদের ছোড়া গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় দরজা, জানালা, বাড়ি ও দেওয়াল।

কবির ভাষায়-“স্বপ্ন তার বুক ভ’রে ছিল, পিতার হৃদয় ছিল, স্নেহে-আর্দ্র চোখ- এদেশের যা কিছু তা হোক না নগণ্য, ক্ষুদ্র তার চোখে মূল্যবান ছিল- নিজের জীবনই শুধু তার কাছে খুব তুচ্ছ ছিল : স্বদেশের মানচিত্র জুড়ে প’ড়ে আছে বিশাল শরীর... তার রক্তে এই মাটি উর্বর হয়েছে, সবচেয়ে রূপবান দীর্ঘাঙ্গ পুরুষ : তার ছায়া দীর্ঘ হতে-হ’তে মানচিত্র ঢেকে দ্যায় সস্নেহে, আদরে!”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আজীবনের স্বপ্ন ছিল বাংলার স্বাধীনতা ও বাঙালির জাতিসত্তার প্রতিষ্ঠা। শৈশব-কৈশোর থেকে তিনি এই আদর্শ নিয়েই বড় হয়ে ওঠেন। নিজেই নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন। তার এই চারিত্রিক দৃঢ়তার পেছনে ছিল গভীর অধ্যয়ন, জানা-চেনা-শোনা ও দেখার গভীর অন্তর্দৃষ্টি। তিনি হৃদয়ের আবেগকে যথেষ্টভাবে ধারণ করতে সমর্থ হন। এর পেছনে ছিল মানুষকে ভালোবাসা ও সাহায্য করার জন্য তার দরদি মন। বঙ্গবন্ধু সবসময় বলতেন- ‘সাত কোটি বাঙালির ভালোবাসার কাঙ্গাল আমি। আমি সব হারাতে পারি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব না।’

ঘাতকের দল তার সেই প্রিয় বাঙালিদের কাছ থেকে, স্বপ্নের স্বাধীন প্রিয় বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শরীরী মুজিবকে হত্যা করলেও বাঙালির হৃয়দ থেকে তাকে মুছে ফেলতে পারেনি তারা। তাই আজও শ্রাবণের বৃষ্টি, সবুজ মাঠের সীমানা, নদীর পাড় ঘেঁষে সমুদ্রের জলেরা, গাছের পাতারাও শোকে ঝরছে অবিরল। বছর ঘুরে রক্তের কালিতে লেখা সেই দিন-রাত বাংলায় বারবার ফিরে আসে। নদীর স্রোতের মতো চির বহমান কাল থেকে কালান্তরে জ্বলবে এ শোকের আগুন। বঙ্গবন্ধু যেন মৃত্যুঞ্জয়ী এমন এক বীরের নাম।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!