ঢাকা : পঁচাত্তরের পর থেকে ১৫ আগস্ট বাঙালির জন্য কালো একটি দিন। সপরিবারে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই দিন বাঙালির ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
কিছু চক্রান্তকারী সেনাসদস্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। তাই আগস্ট এলেই গভীর ও বিনম্র শ্রদ্ধায় পুরো জাতি বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে ঘৃণ্যতম এক অপকর্ম। এরপর ২১ বছর খুনিরা যেভাবে দায়মুক্ত ছিল তাও কলঙ্কিত অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির পদ জবরদখলকারী খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন। সেদিন ছিল শুক্রবার।
‘দি বাংলাদেশ গেজেট, পাবলিশড বাই অথরিটি’ লেখা অধ্যাদেশটিতে খন্দকার মোশতাকের স্বাক্ষর আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেন।
অধ্যাদেশটিতে দুটি ভাগ আছে। প্রথম অংশে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থী যা কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টসহ কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।
দ্বিতীয় অংশে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যয়ন করবেন তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হলো। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।
অবশেষে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর আইনি বাধা অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ (রহিতকরণ) বিল, ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদে উত্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয়। ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি পরিপূর্ণভাবে আইনে পরিণত হয়।
ফলে মোশতাকের জারি করা এবং জিয়াউর রহমানের সময় বৈধতা পাওয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :