ঢাকা : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে থাকছে গোয়েন্দা নজরদারি।
এছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে জ্যামার বসানোসহ বিভিন্ন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মুঠোফোন ব্যবহার করে পরীক্ষার হলে কেউ যেন অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারেন, এ জন্য কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট এলাকায় জ্যামার বসিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হবে। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে এসব জ্যামার বসানো হবে।
গত মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সময় এতে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্ট ঢাকা থেকে জেলার ট্রেজারি সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র পৌঁছানো হবে।
এছাড়া কেন্দ্রে যাতে কোনো পরীক্ষার্থী ইলেকট্রনিকস কমিউনিকেটিভ ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষার্থীরা যাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারেন, এ জন্য প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। নারী প্রার্থীদের কানে কোনো ডিভাইস আছে কি না, তা কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ঠেকাতে বিটিআরসি ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করবে।
আগামী ২২ এপ্রিল শুক্রবার প্রথম ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীরা কাল রোববার থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। আবেদনকারীর নিজ নিজ জেলায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
যেভাবে প্রবেশপত্র ডাউনলোড : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রার্থীদের আবেদনে উল্লিখিত মুঠোফোন নম্বরে যথাসময়ে ০১৫৫২১৪৬০৫৬ নম্বর থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোডের খুদে বার্তা পাঠানো হবে। প্রথম ধাপের প্রার্থীরা কাল থেকে এই ওয়েবসাইটে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অথবা এসএসসির রোল, বোর্ড ও পাসের সন দিয়ে লগইন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে রঙিন প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রার্থীদের অবশ্যই প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট এবং নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলি এবং পরীক্ষাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ও প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে।
২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে যেসব জেলার সব উপজেলায় পরীক্ষা হবে সেগুলো হলো—ঢাকা, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাট।
আর যেসব জেলার কিছু উপজেলায় পরীক্ষা নেওয়া হবে সেগুলো হলো—যশোর (ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা), সিরাজগঞ্জ (উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর), ময়মনসিংহ (ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ), নেত্রকোনা (আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া), কিশোরগঞ্জ (অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী), টাঙ্গাইল (সদর, ভুয়াপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর), কুমিল্লা (বরুড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি) ও নোয়াখালী (কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, সুবর্ণচর)।
প্রাথমিকের ইতিহাসে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :