• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

নতুন করে বাঁচতে শেখার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করল কে?


নিউজ ডেস্ক আগস্ট ১৪, ২০২২, ১১:২৮ এএম
নতুন করে বাঁচতে শেখার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করল কে?

ঢাকা : ফেসবুকে পরিচয়ের পর ৬ মাস প্রেম, তারপর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কলেজছাত্র মামুন (২২) ও কলেজশিক্ষিকা মোছা. খাইরুন নাহার (৪০)। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।

অসম এই বিয়ে অনেকে ভালোভাবে নিলেও সমাজের বেশিরভাগ মানুষ এ নিয়ে ট্রল করেন। সেসব তোয়াক্কা না করে নতুন সংসারে সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন তারা। আজীবন মামুনের সঙ্গে সংসার করে যেতে সকলের দোয়া ও সহযোগিতাও চেয়েছিলেন কলেজশিক্ষিকা খাইরুন নাহার।

সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মামুন আমার খারাপ সময় পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছে এবং নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। পরে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই।’

হঠাৎ করেই আজ থেমে গেলো তাদের সুখের গন্তব্য। মাত্র ছয় মাস আগে মামুন নামের কলেজছাত্রকে বিয়ে করা অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখন এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা জানতে আটক করা হয়েছে স্বামী মামুন হোসাইনকে।

আরও পড়ুন : ছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

ফের এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা সমালোচনা। রাজিব হাসান তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, কলেজছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।

নতুন করে বাঁচতে শেখার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার কে করল? আমার কেবলই মনে হচ্ছে, তার মধ্যে হতাশার পুরোনো ক্ষত খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আবার রক্তাক্ত করেছে সামাজিক মাধ্যমের ইতরগুলো। যারা ছাত্রকে বিয়ে করল শিক্ষিকা—এটা নিয়ে হাস্যরসিকতা করেছে। বিদ্রুপ করেছে। অপমানের বিষমাখা তির ছুড়েছে একের পর এক। চারপাশ থেকে ভেসে আসা কটু কথাগুলো হয়তো আর নিতে পারেননি তিনি।

ফেসবুকে এখন চলছে ইতরপনার মহা-উৎসব। এখানে একটা শ্রেণি আসেই অন্যকে অপমান করে মজা লুটতে। একবারও ভেবে দেখে না এর পরিণতি কী হতে পারে। একেক দিন একেকজনকে বানানো হয় শিকার। এরা অসভ্য, বর্বর, আমার চোখে আজ থেকে এরা খুনি।

শেষ পর্যন্ত হয়তো পুলিশের রিপোর্টে লেখা থাকবে ওই শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আমি বলব, খুব ঠান্ডা মাথায় তাকে খুন করা হয়েছে। আর খুনিরা ঘুরছে আপনার-আমার আশপাশেই।

আনিসুর রহমান নামে এক সংবাদকর্মী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, এই মৃত্যুর দায় নেবে কে? যারা তাকে নিয়ে ক্রমাগত ট্রল করেছে তারা এখন কোথায়? কোথায় সেই মিডিয়া, যে কিনা তাকে সামাজিক দিক দিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করলো?

আরও পড়ুন : ছাত্রকে বিয়ে করা সেই কলেজ শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক

সাখওয়াত মিশু নামে একজন লিখেছেন, কলেজছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার। এ সমাজ তাকে বাঁচতে দিলো না! হায় সমাজ! হায় রাষ্ট্র ! তারা তো তাদের মতো করে থাকতে চেয়েছিল।

সাদিজ্জমান উপল নামে এধরনের বিয়ের রেওয়াজ পশ্চিমা বিশ্বে এভেইলেবল হলেও বাংলাদেশের পারিবারিক ও সামাজিক ব্যবস্থায় বেমানান। আশেপাশের মানুষের কটূক্তি থেকেই মনে হয় ভদ্রমহিলা ডিপ্রেশনে চলে গিয়ে এরকম হটকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আবার অতিরিক্ত মিডিয়া কাভারেজও সামাজিকভাবে ঘটনাটাকে প্রভোকেট করছে।

রাকিব নামে একজন মন্তব্য করেছেন এর জন্য দায়ী এই সমাজ। কারণ অন্যের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ট্রল করতে আমরা অভ্যস্ত। সূত্র : দেশ রুপান্তর

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!