ময়মনসিংহ: সেতুতে উঠতে গর্ত, নামতে গর্ত। সেই গর্ত দিয়ে ঢালাই করা আর সিসি রড বেরিয়ে আছে। ফ্লোরের পলেস্তার উঠে টপ স্লাবের স্থানে গর্ত হয়ে গেছে। দুই পাশের রেলিং ভেঙে লোহার রড বেরিয়ে ধারালো অস্ত্রের ন্যায় এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। অন্ধকারে পথিকদের জন্য যা একটি মারাত্মক দূর্ঘটনার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের সহনাটী ও পেঁচাঙ্গিয়া গ্রাম দিয়ে বয়ে যাওয়া লংকা-পাটেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটির এখন এমন দশা। এর উপর দিয়ে পারাপারকারী যাত্রীরা বলছেন, যাত্রী বোঝাই একটি অটোরিকশা উঠলেই সেতুটি কাঁপতে থাকে। দিনের বেলায় পারাপার করতে পারলেও রাতের বেলায় সেতু পার হওয়ার সময় নদীতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। ভারী যানবাহন তো দূরের কথা, এর উপর দিয়ে কোনো হালকা যানবাহন গেলেই দোলনার মতো দুলতে থাকে। নিচের স্পেনেও ফাটল ধরেছে। নড়বড়ে অবস্থা হলেও বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ সেতু দিয়েই কেন্দুয়া এবং গৌরীপুর এ দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, কেন্দুয়া উপজেলার সাথে গৌরীপুর উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে ভুঁইয়ার বাজারের সংযোগ স্থলে লংকা পাটেশ্বরী নদীর উপর এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২/৯৩ অর্থবছরে ৭ লাখ ১২ হাজার ২৬৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণকালীন সংযোগ সড়কটি কাঁচা ছিলো। সেসময় এ সড়ক দিয়ে কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতোনা। কিন্তু পরবর্তীতে শাহগঞ্জ থেকে ভুঁইয়ার বাজার পর্যন্ত সড়ক পাকা হওয়ার ফলে এ সড়ক দিয়ে নানা ধরণের ভারী যানবাহন চলাচল করে। ফলে সেতুটি ধীরে ধীরে ভাঙ্গনের কবলে পড়তে থাকে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ত্রিশ বছর আগে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী, পেঁচাঙ্গিয়া, হতিয়র, কড়েহাকান্দা, কাশিচরণ, গিধাউষা, রাইশিমুল, পাছার, ঘাটেরকোণা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ভুঁইয়ার বাজার হয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ঈশ্বরগঞ্জ ও জেলাসদরে যাতায়াত করে। কিন্তু সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। সেতুর উপর দিয়ে ভারী কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারায় এই এলাকার মানুষ নির্মাণ সামগ্রী বহনে অনেককে বিকল্প পথে কয়েক কিলোমিটার সড়ক ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয়।
সহনাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহীদাশ আচার্য বলেন, “এ সেতুটি সত্যিই অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। এটি ভেঙে নতুন একটি সেতু তৈরি করা এখন সময়ের দাবি” উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মোঃ ওয়াহেদুল হক বলেন, “আমি ব্রিজটি সম্পর্কে অবগত নই। খুব তাড়াতাড়ি ব্রিজটি সংস্কারের জন্য লোক পাঠাবো।
সোনালীনিউজ/এইচকে/এসআই