লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে শত্রুতামূলক জমি চাষের দুটি ট্রাক্টর ধ্বংসের বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর মোহাম্মদ কামাল হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তি একক মানবন্ধন করেছেন ।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট প্রেস ক্লাবের সামনে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন করেন তিনি। বিচার প্রার্থী কামাল হোসেন কুমিল্লা জেলার নাঙ্গল কোট থানার লক্ষীপদুয়া গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে।
মানববন্ধন শেষে বিচারপ্রার্থী কামলা হোসেন প্রেস ক্লাবে উপস্থিত থাকা সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন যাবত তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি চাষের ট্রাক্টর স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। গেল ৩ বছর থেকে তিনি লালমনিরহাট জেলায় ট্রাক্টর ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার একর জমিতে চাষাবাদ করার চুক্তি করেন। দ্যা মেটাল প্রাইভেট লিঃ থেকে ১৫ লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে মাসিক ৭০ হাজার টাকা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করার শর্তে নতুন ২টি জমি চাষের ট্রাক্টর ক্রয় করে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন।
এ অবস্থায় গেল ১৩ নভেম্বর চাষের কাজ শেষ করে প্রতিদিনের মতো রাতের বেলা পাটগ্রাম উপজেলার শফিরহাটে এজেন্ট আবুল হোসেনের বাড়িতে ট্রাক্টর দুটি রেখে চালকরা ঘুমিয়ে পরলে অজ্ঞাত দূবৃত্তরা ইঞ্জিনে মবিল দেওয়ার লাইন দিয়ে দানাদার বালু ঢুকিয়ে দেয়। এতে পরের দিন সকালে ট্রাক্টরের ইঞ্জিন চালু করে জমিতে নামিয়ে চাষের কিছু মুহুর্ত পর অল্প ট্রাক্টর দুটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরবর্তীতে মেরামত করার সময় জানা যায় ইঞ্জিনে বালু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ইঞ্জিনের অধিকাংশ মূল্যবান যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে গেছে। যার ক্ষতি প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার সমমূল্যের।
এ ব্যাপারে ট্রাক্টর মালিক কামাল হোসেন গত ১৪ নভেম্বর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর তিনি মঙ্গলবার ‘জমি চাষের ট্রাক্টর ধ্বংসের বিচার চাই’ শিরোনামে একটি ব্যানার নিয়ে লালমনিরহাট প্রেস ক্লাবের সামনে একক মানববন্ধন করেন।
কথা হলে ট্রাক্টর মালিক কালাম হোসেন বলেন, এখন চাষাবাদের ভরা মৌসুম চলছে। অজ্ঞাত শত্রুদের কারনে এই সময়ে আমার নগদ আড়াই লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হওয়ার সাথে চাষাবাদের ভরা মৌসুম টাও হাত ছাড়া হয়ে গেলো। এসময় তিনি অসহায় চিত্তে আরো বলেন, চালক, সহকারী চালক, শ্রমিকসহ কমিশন এজেন্ট মিলিয়ে দশ/পনেরটি পরিবার এই ট্রাক্টর দুটির আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল। এঅবস্থায় এতোগুলো মানুষের রুটিরুজি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ট্রাক্টর দুটির কিস্তি পরিশোধ অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।
তিনি সাংবাদিকদের নিকট হতাশা প্রকাশ করে আরো বলেন, এই জেলায় আমার আপনজন বলতে কেউ নেই, তাই এই সংকটের সময় লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সামনে জমি চাষের ট্রাক্টর ধ্বংসের বিচার দাবিতে একাই দাঁড়িয়েছি।
এবিষয়ে পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত বলেন, কামাল হোসেন তার দুটি ট্রাক্টর ধ্বংসের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
সোনালীনিউজ/এসএ/এসআই