ঝালকাঠি: ঝালকাঠির সড়ক ও জনপদ বিভাগের দীর্ঘদিনের পুরাতন ৪১ বেইলি সেতুর প্রায় সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব সেতুতে একের পর এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। আটকে পড়ছে যানবাহন, বন্ধ থাকছে যানচলাচল। বিভিন্ন সময় নামমাত্র মেরামত করা হলেও এ সমস্যা সমাধানে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। ঝালকাঠির সড়ক ও জনপদ বিভাগের ২শ’ ৬০ কিলোমিটার সড়কে ৪১টি বেশি বেইলি সেতুর প্রায় সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ।
বিভিন্ন সময় এসব সেতুগুলোর একেকটির পাত (প্লেট) ভেঙে কিংবা দেবে গিয়ে প্রতিনিয়নতই ঘটছে দূর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে অনেকে। এসব সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সড়ক বিভাগের পক্ষ থেক নেই কোন সর্তকতামূলক সংকেত। ঝুঁকি নিয়ে সরু এ সেতুগুলো ভয়ে ভয়ে পাড় হতে নানা বেগ পেতে হয় চালকদের। ৩০/৪০ বছরের এসব পুরাতন ব্রীজগুলো বিভিন্ন সময় নামমাত্র মেরামত করা হলেও গাড়ির চাকার দাপটে আবার ভেঙে একাকার হয়ে দূর্ঘটনা পড়ছে ট্রাক, বাস ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। অধিকাংশ সেতু বেশি পুরাতন হওয়ায় কোনটি বেঁকে গিয়ে দেবে আছে। এসব ব্রীজে যে কোন সময় যাত্রীবাহি বাসসহ ধসে গিয়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এছাড়া মহাসড়কে যত্রতত্র স্পীড ব্রেকার ও সড়কের অগনিত মোড়ে সঠিকভাবে সাংকেতিক ফলক না থাকায় ঘণ কুয়াশায় দুর্ঘটনায় ঘটছে। এসব সমস্যা সমাধানে নেই কোন উদ্যোগ। চালক ও স্থানীয়রা বলছেন, বেইলি ব্রীজের প্রায় সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ, প্রতিনিয়তই ঘটছে দূর্ঘটনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরু এ ব্রীজগুলো ভয়ে ভয়ে পাড় হতে নানা বেগ পেতে হয় চালকদের। এসব সেতু ভেঙে নতুন করে ঢালাই ব্রীজের দাবি স্থানীয়দের।
জানা গেছে, বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির বাসন্ডা নদীর ওপর আশির দশকে নির্মিত বেইলি ব্রীজটি চার বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রীজটি দিয়ে বরিশাল বা ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটাসহ দক্ষিন-পশ্চিম আঞ্চলগামী প্রতিদিন শত শত যানবহন যাতায়াত করে। ব্রিজটির উপরে কোন যাত্রীবাহি বাস বা ট্রাক উঠলে, চালক ও যাত্রীরা অনুভব করেন, ব্রিজটি দুলছে। এছাড়া এই ব্রীজের সস্মাবগুলো আলগা হয়ে রয়েছে। প্রায়ই এখানে দূর্ঘটনা ঘটে।
এই ব্রিজে দূর্ঘটনার স্বীকার হয়ে কেউ কেউ পঙ্গু হয়েছেন বলেও জানান স্থানীয়রা। শুধু বাসন্ডা বেইলি ব্রিজই নয়, সদর উপজেলার কির্ত্তিপাশা ইউনিয়নের বেশাইনখান ও তারাপাশার ২টি বেইলি ব্রিজ, রাজাপুরের বাগড়ী বেইলি ব্রীজ, নৈকাঠি বেইলি ব্রিজসহ জেলার ৪১টি বেইলি ব্রিজ ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। এ ব্রীজগুলো দ্রুত মেরামত বা নতুন করে নির্মাণ করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। অনুমোদন হলেই ঝুকিপূর্ণ বেইলী ব্রিজগুলো পরিবর্তে সেখানে নতুন ব্রিজ ও কার্লভার্ট নির্মাণ করা হবে। ঝালকাঠি জেলার ঝুকিপূর্ণ বেইলী সেতুগুলো দ্রুতই পুনঃ স্থাপনকরন করে ঘোটা দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে নির্ভীগ্নে যান চলাচলের করবে এমটাই প্রত্যাশা সকলের।
সোনালীনিউজ/আরআর/এসআই