আশুলিয়া: আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব কলতাসুতী গ্রামে ভিটে-বাড়ি থাকতেও প্রতিবন্ধী মেয়ে শিউলী এবং ছেলে ফিরোজকে নিয়ে বন্দী জীবনযাপন করছে অসহায় ফিরোজা খাতুন। বাড়িতে আসা-যাওয়ার রাস্তাটি প্রাচির দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা।
এলাকাবাসি ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২০বছর আগে ফিরোজার স্বামী মৃত চান মিয়া বেপারী ৫শতাংশ জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। গত ১০ বছর আগে চান মিয়া মারা যাওয়ার পর প্রতিবেশী রশিদ বাড়িটি কিনে নিতে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখাতে থাকে। রশিদের কথামত বাড়ি বিক্রি না করায় বন্ধ করে দিতে থাকে বাড়িতে আসা যাওয়ার পথ।
সরেজমিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ফিরোজা খাতুনের বাড়ির পূর্ব পাশে জামাল, দক্ষিণ পাশে নজরুল, উত্তরে রশিদের বাড়ি এবং পশ্চিমে জলাশয়। তার বাড়ির তিন দিক থেকেই প্রাচীর নির্মাণ করে বের হয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর পশ্চিম পাশে ডোবা বা জলাশয় থাকার কারণে সেদিক দিয়েও চলাচল করা অসম্ভব। তবে উত্তরে আব্দুর রশিদের বাড়ির উপর দিয়েই হাটার একমাত্র রাস্তা ছিল যা বাউন্ডারি ওয়াল করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে নিজের বাড়িতেই বন্দী জীবন যাপন করছে বিধবা ফিরোজা ও তার পরিবার।
ফিরোজা খাতুন বলেন, প্রতিবন্ধি মেয়ে আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কোথায় যাবো? আমরা বাড়ি থেকে বেড়োতে পারিনা, ছেলেটাও সময়মত কাজে যেতে পারেনা, খুবই কষ্টে আছি। থানা থেকে পুলিশ এসে আমাকেই ধমক দেয়। কোথায় যাবো ? বিচার পেতে কার কাছে যাবো? চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি কিন্তু ওরা চেয়ারম্যানের কথাও শোনেনা।
এলাকাবাসী জানান, বিধবা ফিরোজার মাথা গোজার ঠাই একমাত্র সম্বল ৫শতাংশ জমির ওপর কুনজর পড়েছে প্রতিবেশী রশিদের। এরআগে মঞ্জু নামের এক ব্যক্তির বাড়ির রাস্তা বন্ধ করে অল্প দামে কিনে নিয়েছে রশিদ। এবারও একই কৌশল অবলম্বন করছে সে। পুরো সমাজ রশিদের কাছে জিম্মি , কারণে অকারণে পুলিশ এনে এলাকার মানুষকে হয়রানি করে। পুলিশও ওর কথাই বলে।
স্থানীয় খালেক পরামানিক নামের একজন বলেন, এভাবে একটি অসহায় পরিবারকে গৃহবন্দি করে রাখা একে বারেই অমানবিক, এঁদের একটা রাস্তা ব্যবস্থা করা দরকার। এভাবে মানুষ বাচতে পারেনা।
এব্যাপারে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ,বি,এম আজাহারুল ইসলাম সুরুজ বলেন, আমি নিজে ফিরোজার বাড়ি দেখতে গিয়েছি, এই পরিবারটির ওপর অমানবিক অত্যাচার করা হচ্ছে। রশিদ আমার কথা শোনেনা তাঁর নাকি অনেক উপরে হাত আছে।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নিপা জানান, এ ব্যপারে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। একটা আবেদন করলে চৌহদ্দী দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনালীনিউজ/এআই/এসআই