ব্রাহ্মণবাড়িয়া : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিনে ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার পরীক্ষায় দেশ সেরা ফলাফল অর্জন কারী আঁখিনুরের অর্থের অভাবে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। আঁখিনুর এবার কুমিল্লার হোমনা কৃষি ইনষ্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচারে সিজিপিএস ৪.০০ পেয়ে সারাদেশের মধ্যে প্রথম অধিকার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সে আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ঝিকুটিয়া গ্রামের মৃত মজিবুর রহমান মুন্সীর মেয়ে। গত তিন বছর আগে তার বাবা মারা যায়।
অসহায় নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে আঁখিনূর। নুন আনতে পান্তা পুরানের মতো অবস্থা আঁখিনূরের পরিবারে। তার ইচ্ছে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা। কিন্ত বাধ সাধে দারিদ্রতা। তার চোখে এখন গোর অন্ধকার। অভাব অটনের সংসারের তার দুইটি বোন রয়েছে। তারা দুই জনই শারিরীক প্রতিবন্ধী। পারিবারিক অভাব অনটনের মাঝে সে এতটুকু এসেছে।
সে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কুমিল্লার হোমনা কৃষি ইনষ্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচারে সিজিপিএস ৪.০০ পেয়ে সারাদেশের মধ্যে প্রথম হয়। এখন তার উচ্চ শিক্ষায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অভাব অনটন।
আঁখিনূর বলেন, আমি পড়াশুনা করতে গিয়ে বাড়ি থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়নি। টিউশনি করে নিয়মিত পড়াশুনা খরচ চালিয়ে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। দিন রাত প্রচুর পরিশ্রমসহ ছোট বড় সকলের দোয়া আছে বলেই তারই ফল স্বরুপ আমি বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করতে পেরেছি।
আঁখিনুর বলেন, আজ থেকে ৪ বছর পূর্বে আমার বিবাহ হয়। সংসারে আমার একটি সন্তান রয়েছে। পারিবারিক খরচসহ নানা কারণে তার স্বামী ঋণগ্রস্ত হওয়ায় পরিবারের পক্ষে উচ্চতর শিক্ষার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। অর্থের অভাবে তার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষা যেন এখানেই থেমে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। তার সহপাঠি মো. লতিফুর রহমান বলেন, ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি ছিল খুবই মনযোগি। কোন পড়ালেখা ফাঁকি দেয়নি। পড়ালেখা করতে সে প্রচুর পরিশ্রম করায় আজ বাংলাদেশের মধ্যে সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সে আমাদের গর্ব। এই অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রতি সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন তাহলে তার উচ্চ শিক্ষা অর্জন খুবই সহজ হবে।
আঁখিনূরের মা রেনুয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়েটা অনেক কষ্টকরে লেখাপড়া করেছে। সে আরো উপরের লেভেলে পড়তে চাই। অভাব অটনের সংসারে আমার পক্ষে আর পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই তিনি তার মেয়ের লেখাপড়ার খরচের জন্য সমাজের বিত্তবান ও স্থানীয় সাংসদ আইমন্ত্রী আনিসুল হকের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই