পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে প্রেমের সম্পর্কের ঘটনায় সালিস বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে, তালাক দেওয়া এবং প্রেমিককে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার (৬০)সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুন) সকালে প্রেমিক রমজান হাওলাদারের বড় ভাই হাফেজ মো. আল ইমরান বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আমলী আদালতে মামলা করেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আল-আমিন বলেন, অভিযুক্ত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি নাবালিকা মেয়েকে জেনেশুনে জোরপূর্বক বিয়ে করেন এবং তার প্রেমিককে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। পরে ওই যুবক বিষ খেয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।
এ ঘটনা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে চেয়ারম্যান ওই কিশোরীকে তালাক দেন। এই ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ তার পাঁচ সহযোগী এবং নিকাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী মাওলানা মো. আইয়ুবকে আসামি করা হয়েছে। আদালতে কিশোরী নাজমিন আক্তারের (১৩) জন্ম সনদ এবং রমজান হাওলাদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আমলী আদালতের বিচারক মো. জামাল হোসেনের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জেলা পিবিআই প্রধানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রেমের সম্পর্ক মেটাতে গত শুক্রবার সালিশে গিয়ে সালিশে গিয়ে নিজেই ১৬ বছরের কিশোরীকে পছন্দ করেন চেয়ারম্যান। আর ওই দিনই তিনি কিশোরীকে বিয়ে করেন। এর ৪দিন আগে পটুয়াখালী জেলার বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা মার্কা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শাহিন হাওলাদার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে যে, কনকদিয়া ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান (২৫) নামের এক যুবকের সাথে একই ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার নবম শ্রেণির ছাত্রী নছিমনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি নছিমনের বাবা নজরুল ইসলাম। তিনি এবিষয়টি কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান।
চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার শুক্রবার ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে রমজান ও নছিমনসহ দুই পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সালিস বৈঠকে মেয়ে দেখে পছন্দ হয়ে যাওয়ায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। মেয়ের বাবা এ বিয়েতে সম্মতি প্রকাশ করলে ওই দিন বাদজুমা চেয়ারম্যানের আয়লা বাজারস্থ বাসায় কাজী ডেকে এনে ৫ লাখ টাকা কাবিনে নছিমনকে বিয়ে করেন।
নছিমন কনকদিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা সাংবাদিকদের জানান, ওই কিশোরীর বয়স ১৫-১৬ বছর হবে।
সোনালীনিউজ/এমএইচ