মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ শহরেই পরম মমতায় লালন পালন করা হচ্ছে কোরবানির পশু ষাড় শের খানকে। বর্তমানে এই ষাড়টির ওজন ২১ মান। প্রতিদিন গড়ে ১৮০ কেজি খাবার খায় শের খান।
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের রনছ গাজী বাড়ি এলাকার খামাড়ি সোহান গাজির খামাড়েই বেড়ে উঠেছে ষাড়টি।কোরবানির ঈদ সামনে রেখে তিনি শের খানকে বিক্রি করতে চান। আর এতেই ষাঁড়টি সবার নজরে এসেছে। ৮৫০ কেজি (২১ মণের বেশি) ওজনের ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমছে।
ষাঁড়টির লালনপালনকারী খামারি মো. সোহান গাজী বলেন, ঘন কালো ও সাদা সুঠাম দেহের অধিকারী ষাঁড়টির নাম তিনি দিয়েছেন শের খান। তার মধ্যে হালকা রাগ আছে। খামারের সবার সঙ্গে তার ভাব। সব সময় কেউ না কেউ গায়ে হাত বুলিয়ে তাকে আদর করে। কেউ পিঠে হাত দিলেও বিরক্ত হয় না সে। সব সময় খোশমেজাজে থাকে।
সোহান আরো বলেন, আমি এই এলাকায় প্রায় চার বছর আগে মুন্সিগঞ্জ শহরের রনছ রুহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন গাজী ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলি। সব সময় ভালো জাতের গরু -গাভী পালনের চেষ্টা করছি। সেই ইচ্ছা থেকেই আমি গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি কুষ্টিয়া জেলা থেকে কিনে লালন পালন শুরু করি।
গতবছর কেনার সময় ষাঁড়টির ওজন ছিল ৯ মণ। শুরু থেকেই আমি তাকে খেসারি ভুসি, ভূট্টা ফাঁকি, খৈল, গমের ভুসি এবং কাঁচা ঘাস খাওয়ানো শুরু করি। এতে তার খাওয়ার রুচি বেড়ে যায়। বয়স ও ওজন হিসাব করে তাকে খাওয়াতে থাকি। বর্তমানে ষাঁড়টি প্রতিদিন পানিসহ ১৮০ কেজি খাবার খায়। ষাঁড়টির কখনোই কোন রোগবালাই হয়নি। মোটাতাজাকরণের জন্য বিন্দুমাত্র ওষুধও খাওয়ানো হয়নি। বর্তমানে ষাঁড়টি লম্বায় ৮ ফুট, উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট, ওজন ৮ শত ৫০ কেজি। পরিচর্যা করলে ষাঁড়টির ওজন হাজার কেজি পর্যন্ত হবে বলেও, তিনি জানান। এ-জাতীয় ষাঁড় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বাঁচে। এখন ষাঁড়টির বয়স মাত্র তিন বছর।
সোহান আরও বলেন, ষাঁড়টি তাঁর পরিবারের একজন প্রিয় সদস্য হয়ে গেছে। তবু বাস্তবতার তাগিদে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করে দিতে চান। কদর বোঝেন, এমন শৌখিন কোনো লোক ষাঁড়টি কিনলে তিনি সবচেয়ে খুশি হবেন। উপযুক্ত দাম পেলেই তিনি বিক্রি করবেন ষাড়টি।
নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেরের মত তার হাক ডাক , ষাঁড়টি দেখতে তেমনি। তাই শখ করে তিনি ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন শের খান। আরও জানান, তার গাজী ডেইরি ফার্মে শের খান ছাড়াও ১৩ টি ষাঁড় রয়েছে। তাছাড়াও ছাগল ও ভেড়া পালন করেন।
শের খানকে দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা আকাশ বলেন, ষাঁড়টি এবার ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির কথা হচ্ছে। এটা শোনার পর থেকে আমার খুব খারাপও লাগছে। ফার্মের অনেক সময় কাটে শের খানের সঙ্গে। তাকে প্রতি বেলায় খাবার খাওয়াই, গোসল করাই। তাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখি। আমার সাথে ষাঁড়টি বন্ধুর মতো আচরণ করে। বিক্রি হয়ে গেলেও ষাঁড়টির কথা মনে পড়বে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই