টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডের কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট সূচি বেগমের আঙুল কেটে ফেলা মামলায় কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, তার ছোট ভাই শাহ আলম ও জহুরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) তারা আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে হামলা, ভাঙচুর, আঙুল কেটে ফেলা ও মারপিটের অভিযোগ এনে গত ১ ফেব্রুয়ারি সূচির ভাই জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করে ২৭ জনের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে উচ্চ আদালতে আগাম জামিন নেন তারা।
গত ৩০ জানুয়ারি ভূঞাপুর পৌরসভা নির্বাচনে ১ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী কেন্দ্রের নৌকা প্রতীকের এজেন্ট সূচি বেগমকে এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য কর্মীদের ওপর নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য অতর্কিত হামলা ও নৌকা প্রতীকের এজেন্ট সূচি বেগমকে নির্বাচনী বুথ থেকে টেনে বের করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধাঙুল কেটে ফেলার অভিযোগে কাউন্সিলর মো. আনোয়ার হোসেনকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত ৩ মে ভূঞাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল বাছিদ মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক মো. খাইরুল ইসলাম তালুকদার বাবলুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিচয়সহ দলীয় সকল পরিচয় থেকে তাকে বিরত থাকতে বলা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হজরত আলী সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের জামিনে ছিল। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) তারা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলামের আদালতে হাজির হন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ৩০ জানুয়ারি সকাল থেকেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছিল টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। ভোটারদের দীর্ঘ লাইনও ছিল সেখানে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছিলেন নারী ও পুরুষ ভোটাররা। বেলা পৌনে ১২টায় হঠাৎ করেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। নিজের অবস্থা শোচনীয় দেখে জাল ভোট দিতে যান কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের লোকজন। বাধা দেয় অপর কাউন্সিলর প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের সমর্থকরা। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। শুরু হয় সংঘর্ষ।
লাঠি হাতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন সদ্য বিজয়ী কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। কেটে ফেলা হয় নৌকা প্রতীকের এজেন্ট সূচি বেগমের আঙুল। গুরুতর আহত হয় ৭ জন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। নিজের (আনোয়ারের) সমর্থক আহত খায়রুল মারা গেছে এমন গুজব রটিয়ে বাকিটা সময় কেন্দ্র নিজেদের দখলে রাখেন তিনি।
শুধু তাই নয়, ফলাফল ঘোষণা শেষে বিজয়ী হওয়ার পর আরেক খেলায় মেতে ওঠেন আনোয়ার হোসেন। তিনিসহ হিংস্র হয়ে ওঠেন তার সমর্থকরা। শুরু হয় প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা। দফায় দফায় চালানো হয় হামলা। ভাঙচুর ও কোপানো হয় কমপক্ষে ১৫টি বাড়ি।
সোনালীনিউজ/এসএন