বগুড়া : নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক। এনিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
নৌকার প্রার্থী রিজু হোসেন তার পরাজয়ের জন্য ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে দায়ী করে বলেছেন, নির্বাচনের পরদিন বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দেওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে তিনি কার পক্ষে কাজ করেছেন।
রোববার (২৮ নভেম্বর) বগুড়া সদর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নিশিন্দারা ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ছয় হাজার ৯৯২ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুবলীগ নেতা রিজু হোসেন এক হাজার ৬১২ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচনের পরদিনই বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিকের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম। এসময় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন শফিক। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকে বিরূপ মন্তব্য করছেন।
বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ আলী খোকা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শে গত আড়াই বছর ধরে আমি এলাকায় নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়েছি। লোকজনের কাছে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রচার করি। কিন্তু মনোনয়ন পেলো আরেকজন। নৌকা মার্কার জন্য আমার নাম ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল কি-না সে বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে। তারপরও আমি মনোনয়ন জমা দেই। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন করতে নিষেধ করেন।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতা শহিদুলকে ভোটে পাস করানোর জন্যই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কৌশল করে আমাকে বাদ দিয়ে দুর্বল প্রার্থী রিজুকে নৌকা মার্কা পেতে সহযোগিতা করেছেন। এবার ধানের শীষ প্রতীক ছিল না, আমি নৌকা মার্কা পেলে শহিদুলের পরাজয় হতো। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতারা চাননি আমি প্রার্থী হই।’
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রিজু হোসেন বলেন, ‘বগুড়ায় বিএনপির সঙ্গে লিয়াজোঁ করে রাজনীতি করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক। নির্বাচনে তিনি নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ না করে গোপনে বিএনপি নেতার জন্য কাজ করেছেন। শফিকের ইন্ধনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে কাজ করেননি। ভোটের পর নির্বাচিত বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করার ছবি দেখেই বোঝা যায় তিনি কার পক্ষে কাজ করেছেন।’
এ বিষয়ে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি পরপর তিনবার নির্বাচিত হলাম। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আবু সুফিয়ান শফিককে আমি নিজেই ফুলের মালা দিয়েছি। এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব।’
জানতে চাইলে বগুড়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক বলেন, ‘কে কী বললো এটা দেখা বা শোনার টাইম আমার নাই!’
সোনালীনিউজ/এমএস