নারায়ণগঞ্জ : চাঞ্চল্যকর নয়ন মিয়া হত্যা মামলার আসামিদের ফাসিঁ ও হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় একজন পুলিশ সুপারের (এসপি) শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এক ঘন্টা ধরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে এলাকাবাসীরা নয়ন মিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও এ হত্যা কান্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও তাদের ফাঁসির দাবি করা হয়। এছাড়া মানববন্ধনে বক্তারা হত্যা মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত ও আসামিদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ এনে ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (ট্রেনিং অ্যান্ড মিডিয়া) নাবিলা জাফরিন রীনার শাস্তি দাবি করেন। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েক’শ নারী পুরুষ এসময় বিক্ষোভ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহত নয়ন মিয়ার বাবা আলম ব্যাপারী জানান, সনমান্দী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত সদস্য দেলোয়ার হোসেনের পক্ষে নির্বাচনের সময় কাজ না করার অপরাধে দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগীরা আমার ছেলে নয়ন মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে টেটাবিদ্ধ করে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ সড়কের পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। আমার ছেলেকে হত্যা করার পর সোনারগাঁ থানা পুলিশ আমার দেওয়া মামলা (এজাহার) পরিবর্তন করে আমার সই জাল করে মামলাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে দায় সায়রা ভাবে একটি এজাহার গ্রহন করে। আদালত থেকে মামলার কপি পাওয়ার পর বিষয়টি আমার নজরে আসে। আমরা জানতে পেরেছি। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জে কর্মরত পুলিশ সুপার (এসপি) নাবিলা জাফরিন রীনা মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনের নিকট আত্মীয় হওয়ার কারনে ওই এসপির নির্দেশে থানা পুলিশ আমার সই জাল করে দায় সায়রা ভাবে একটি এজাহার গ্রহন করেছে।
মামলার বাদি নিহতের বাবা আলম ব্যাপারী আরো জানান, থানা পুলিশ কর্তৃক আমার সই জাল করার বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে লিখিতভাবে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি)কে অবগত করে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মাধ্যমে তদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
মানববন্ধন চলাকালীন সময় নিহত নয়ন মিয়ার বাবা আলম ব্যাপারী, তার মা রহিমা বেগম ও স্ত্রী মানছুরা আক্তার গনকান্না করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (ট্রেনিং অ্যান্ড মিডিয়া) নাবিলা জাফরিন রীনা সাংবাদিকদের জানান, আমার বিরুদ্ধে মামলার বাদি পক্ষের আনীত অভিযোগ সত্য নয়। আমি এ ব্যাপারে কোনো হস্থক্ষেপ করিনি। আমি চাই প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি হোক।
এ ব্যাপারে নয়ন মিয়া হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, থানা পুলিশ বাদির সই জাল করার সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ ঘটনার পরের দিন মামলার প্রধান আসামি নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে পাচঁদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান চলছে।
সোনালীনিউজ/এসএন