কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় কাঁচামরিচের সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েছে প্রতিটি পণ্যের দাম সংকটের অজুহাতে বাজারে হু হু করে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম বাড়ানো হয়েছে কেজিপ্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা। পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচ একপাল্লা (৫ কেজি) এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০০ টাকা। এ অবস্থায় ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সবজি বাজারেও প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে আকাশছোঁয়া গতিতে। ডলারের দর বৃদ্ধি ও রিজার্ভ সাশ্রয়ে আমদানি নিরুৎসাহিত করায় সব ধরনের আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দায় মানুষের আয় বাড়েনি। বরং অনেক ক্ষেত্রে কমেছে। এতে করে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষ চাহিদা অনুযায়ী পণ্য কিনতে পারছে না। এতে তাদের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।
জানা যায়, হঠাৎ কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দিয়েছে। এ ‘সংকট’কে পুঁজি করে কয়েক দিনের ব্যবধানে নিত্যপণ্যটির দাম বাড়ানো হয়েছে কেজিপ্রতি ৯০ টাকা। কাঁচা মরিচের সংকটে প্রভাব পড়েছে শুকনো মরিচেও। বাজারে দেশি শুকনা মরিচ কেজি ৩০০-৪০০ টাকায় এবং ভারতীয় মরিচ ৪২০-৪৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত কয়েক দিন আগেও দাম ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। বাজারে ১-২ দিনের বাসি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায় এবং তাজা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকার উপরে। আড়তদাররা জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ নেই বললেই চলে তাই। আগে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে সহড়ে গাড়িতে করে কাঁচামরিচ আসত। এখন আসছেনা। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়ছে। বৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় কাঁচামরিচ আসছে না। বাজারে যেসব মরিচ পাওয়া যাচ্ছে তা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা। এ কারণে বেড়েছে পরিবহণ খরচও অনেক। তাই বেড়েছে মরিচের দাম। অতি বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ফলে নিত্যপণ্যটি দাম আকাশছুঁই দাম বেড়েছে।
জানা যায়, ভারত থেকে দুই হাজার টন কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি মিলেছে। প্রায় ৮ মাস পর বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হতে যাচ্ছে কাঁচামরিচ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক কর্তৃপক্ষ তারা বলেন, কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি মেলায় বন্দরের ব্যবসায়ীরা এলসি করেছেন। এখন থেকে আমদানি শুরু হলে দাম কমে আসবে। বিপাকে মধ্য নিম্ন আয়ের মানুষ : দেশে চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম বেড়েই চলেছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আকস্মিক বন্যাতে অনেক সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ফলে সবজির দামও বেড়েছে। হাইব্রিড টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। কোনো কোনো বাজারে ১৩০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি টমেটো ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। শসা ও বেগুনের এখন ভরা মৌসুম। যে কারণে এ দুটির দাম কিছুটা কম। প্রতি কেজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গোল আলুর কেজি ছিল ২৮ টাকা। এখন তা বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। এছাড়া পেঁপে ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, করলা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ছিল ৪০ টাকা। এখন তা বেড়ে ৪৫ টাকা হয়েছে। দেশি রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। আমদানি বড় দানার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।
সোনালীনিউজ/আরকে/এসআই