ভূমির রেকর্ড সংশোধনে টাকা দাবির অভিযোগ, ব্যবস্থা নিতে চিঠি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩, ০৫:৫৭ পিএম

ঢাকা: রেকর্ড সংশোধনের আদেশ প্রদানের কথা বলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শরিয়তপুর সদর সার্কেলের সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন একজন ভূক্তভোগী। 

অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পত্র দিয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব।সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জনপ্রশাসন সচিবের লেখা চিঠিতে বলা হয়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার হাফেজ মাওলানা সামসুল কর্তৃক শরীয়তপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিজা খাতুন এর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগের ছায়ালিপিসহ নির্দেশক্রমে এর সাথে প্রেরণ করা হলো। 

জনপ্রশাসন সচিবকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে মাওলানা সামসুল আলম বলেন, আমি শরিয়তপুর সদরের থানা পাড়া সংলগ্ন স্থায়ী বাসিন্দা। আমি বিগত ২০১৭ সালে ২৯ শতক জমি ক্রয় করি। ক্রয় করার পরে টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় রেকর্ড সংশোধন করিতে পারি নাই। কারন উক্ত সম্পত্তি 'খ' তফসিল ভুক্ত হওয়ায় আমি বিগত কয়েক বছর যাবত অনেক ঘোরাঘুরি করেছি। তথাপি আজ পর্যন্ত রেকর্ড সংশোধন করতে পারি নাই। গত মাসে উপজেলা ভূমি অফিস শরীয়তপুর সদর-এর এসিল্যান্ড মনিজা খাতুন, শরীয়তপুর সদরে যোগদানের পর থেকেই অনেক আশা প্রকাশ করি। একজন নারী এসিল্যান্ড আসায় উপকৃত হবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছি এবং আমি স্যারের সাথে দেখা করার পরে আবেদন করতে বলেন। আমি যথাসময়ে আবেদন করি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ করলে, তিনি নাজিরের সাথে দেখা করতে বলেন। আমি নাজিরের সাথে দেখা করলে নাজির জানায়, স্যারকে ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা এবং আমাকে ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা দিতে হবে। বিষয়টি আমি এসিল্যান্ডকে অবহিত করলে তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন নাজির যা বলেছেন ঐটাই শেষ কথা। 

পরবর্তীতে আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানিতে পেশ করি। তথাপি আমার মত একজন মাওলানা নারী এসিল্যান্ডের কাছ থেকে সামান্য কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় আমি ভীষণভাবে মর্মাহত। পরবর্তীতে আরো জানতে পারলাম উক্ত এসিল্যান্ড উপজেলা ভূমি অফিসকে ঘুষ আর দুর্নীতির রাজ্য তৈরি করেছেন। টাকা ছাড়া নাকি এসিল্যান্ড কোন ফাইল সই করেন না। তিনি অতি গোপনে ভূমি অফিসের নাজিরের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্বামী সাধারণ একজন স্কুল শিক্ষক। সমস্ত ঘুষ ও দূর্নীতির কোটি কোটি টাকা তার স্বামীর একাউন্ডে ও আত্মীয়স্বজনের নামে বেনামে বিপুল সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন। সব চেয়ে বেশি সাধারণ সেবা প্রত্যাশিদের হয়রানি করেছেন নামজারীর মাধ্যমে। প্রতিটা নামজারিতে এসিল্যান্ডের নির্ধারিত ফিস ১২০০/- টাকা। এরপরে একের অধিক দলিল প্রতি ১৫০০/- টাকা দিতে হয়। জমির পরিমান ৫০ শতকের বেশি হলে প্রতি একরে ৪০,০০০/- টাকা দিতে হয়। ভিপি খ তফসিলের নামজারি ক্ষেত্রে কেস প্রতি ১,০০,০০০/- টাকা। জমির পরিমান বেশি হলে ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। এমনকি টাকা কম দিতে চাইলে অফিস থেকে বের করে দেন। তিনি আরো বলেন, এডিসি হলে আরকোন টাকা পয়সা পাবো না এখনি টাকা কামানোর সময়। আমি ফ্রি কোন কাজ করি না। শত অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও টাকা ছাড়া কোন ফাইল স্বাক্ষর করেন না। ইতিপূর্বে শরীয়তপুর সদরে ভূমি অফিসে এমন অফিসার শরীয়তপুরবাসী আর কখনো পায়নি। এমতাবস্থায় উক্ত কর্মকর্তাকে ঘুষ ও দূর্নীতির বিষয়ে সঠিক তদন্ত করা হোক।

সোনালীনিউজ/এসআই/আইএ