ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে অভিনব কায়দায় চুরি হচ্ছে বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতের মিটার। সংঘবদ্ধচোর চক্র মিটার চুরি করে সেখানে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে যাচ্ছে। সে নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা মিটারপ্রতি ৫-১৫ হাজার পর্যন্ত দাবি করছে। পরে চাহিদা অনুযায়ী টাকা বিকাশে পাঠালে তারা মিটার ফেরত দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৫ দিনে উপজেলার মুলাডুলি ও দাশুড়িয়া ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামে ২০-২৫টি মিটার চুরি হয়েছে। মিটার চুরি আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগীরা জানায়, এমনিতেই দিন-রাতে সমান তালে লোডশেডিং চলে। সম্প্রতি রাতে সংঘবদ্ধ চোর চক্র বহরপুর গ্রামের ১৫টি মিটার খুলে নিয়ে যায়। সকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ না আসার আশপাশে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় বিদ্যুৎ আছে। পরে মিটারের কাছে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার চুরে নিয়ে গেছে। মিটারের বক্সের সঙ্গে একটি মোবাইল নম্বর লিখে কাগজ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আরমান আলী বলেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। আমি ভেবেছি লোডশেডিং হয়েছে। সকালে আমার বাড়ির অন্য অংশে আরেকটি মিটার ছিল সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ দেখতে পেলাম। পরে বাড়ির ও ধান চাতালের মিটার কাছে এসে দেখি সেগুলো চুরি হয়ে গেছে। সেখানে চোরের রেখে যাওয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন একটি মিটারের জন্য বিকাশে ১৪ হাজার টাকা দিতে হবে। পরে দরদাম করে মিটার দুটির জন্য বিকাশে টাকা পাঠিয়েছি। তারপর তারা জানালো একটি মিটার ধানের খড়ের পালায় ও আরেকটি খাদের পাশে রাখা আছে। মিটার চুরির পর পল্লি বিদ্যুতের অফিসে গিয়েছিলাম। বিদ্যুৎ অফিস থেকে জানানো হয় নতুন মিটার নিতে হলে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। আপনারা চোরদের ম্যানেজ করে মিটার ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করুন এতে খরচ কম হবে।
উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, যেভাবে মিটার চুরি হচ্ছে তা সাধারণ চোরের পক্ষে চুরি করা সম্ভব নয়। যারা বিদ্যুতের কাজের সঙ্গে জড়িত তারাই এসব চুরি করছে। শুধু মিটারই না বিদ্যুৎ টাওয়ারের তার পর্যন্ত কেটে নেওয়া হচ্ছে। এসব চুরির ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলার মুলাডুলি এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, বিকাশে টাকা দেয়ার পর তারা মিটার কোথায় আছে তা বলে দিচ্ছে। শুধু এ এলাকাতেই নয় পার্শ্ববর্তী রামচন্দ্রপুর, মুলাডুলি, দাশুড়িয়া ও রাজাপুর এলাকায় মিটার চুরি হয়েছে।
পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কামাল হোসেন জানান, এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, বিদ্যুৎ অফিস থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএস