উদ্যোক্তার মোবাইল নাম্বারে একাধিক ভাতাভোগীদের নাম

  • কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম

কাউনিয়া: রংপুরের কাউনিয়ায় হারাগাছ ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তার মোবাইল নাম্বারে দিয়ে একাধিক ভাতাভোগীদের আবেদনে করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সচেতন মানুষের মধ্যে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। 

তারা বলছেন, কত অনিয়মের কথাই শুনেছি। কিন্তু এমন অনিয়মের কথা আগে আর শুনিনি। এতে করে চুড়ান্ত তালিকা প্রনয়েন সমস্যায় পড়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। 

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা মতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক-বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা প্রাপ্ত সব সুবিধাভোগীর মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গভর্নমেন্ট টু পাবলিক (জিটুপি) পদ্ধতিতে সরাসরি টাকা পাঠানোর জন্য ভাতাভোগীদের অনলাইন (এমআইএস) কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ভাতা পাওয়ার যোগ্য উপকারভোগীরা মোবাইল নাম্বার এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে অনলাইনে আবেদন করেন। কিন্তু ভাতাভোগীদের এমআইএসের আওতায় আনতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। কারণ ভাতাভোগীদের নাম ঠিকানা সঠিক থাকলেও একাধিক ব্যক্তির নামে একই নাম্বার ব্যবহৃত করা হয়। ফলে ভাতাভোগীদের চুড়ান্ত তালিকা এমআইএস করতে সমস্যা দেখা দেয়। 

[219304]

সুত্র জানায়, চলতি অর্থবছর উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নে আবেদনকারী ভাতা উপকারভোগীদের অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। এই তালিকায় সোনাতন গ্রামের ক্রমিক নং ৪৯ জেন্না বেগম, ৪০ নং সালেহা বেগম ও নাজিরদহ গ্রামের ৩৭ নং শাজেদা খাতুন, ৪৭ নং ছকিনা বেগম, ৪৮ নং ছালিনা খাতুন, ৯০ নং আসনা বেগম, ১৬৩ নং সাজেদা খাতুন, ৩৪ নং বন্দের আলী, ৩৯ নং ফাতেমা বেগম, ১০৩ নং আনজিনা বেগম, ৪৬ নং নাজিরদহ গ্রামের খোদেজা বেগম সহ ১১ জন আবেদনকারী নামে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মুনমুন নাহারের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে। যাহা নীতিমালার বহির্ভুত। একাধিক নামে একটি মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করায় তালিকা সংশোধন করার জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে। 

হারাগাছ ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন বলেন, এসব অনিয়মের ফলে অনেক ভাতাভোগীরা সরকারি প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়। কারণ ভাতাভোগীদের টাকা মোবাইলে আসে। যদি মোবাইল নাম্বারে গড়মিল থাকে তাহলে ভাতাভোগী টাকা পাবে না। পরবর্তিতে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তনে সমস্যা দেখা দেয়। 

তারা বলেন, ভাতাভোগীদের টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা তার নিজের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেছে।

তবে উদ্যোক্তা মুনমুন নাহার বলেন, বেশ কয়েকজন আবেদনকারী অনলাইনে আবেদন করার সময় মোবাইল নাম্বার বলতে না পারেন নাই। সে কারণে তিনি তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে ১১ জনের আবেদন করে দিয়েছিলেন। চুড়ান্ত তালিকায় মোবাইল নাম্বার পরিবর্তণ করা যায়। হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদর চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ বলেন, ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাধিক আবেদনকারী ভাতাভোগীদের তালিকা করার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। একটি নাম্বার দিয়ে একাধিক আবেদন করাটা ঠিক হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সামিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর তালিকা সংশোধন করার জন্য বলা হয়েছে। যাচাই বাছাই করে চুড়ান্ত তালিকা এমআইএস করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিদুল হক বলেন, তিনি বিষয়টি এই মাত্র জানতে পারলেন। যাতে কেই একাধিক নাম্বার ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

এমএস