যশোর: চিকিৎসার কথা বলে যশোরের এক গৃহবধূকে ভারতে পাচারের পর পতিতালয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন।
আসামিরা হলো, সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের নরসিংহকাটি গ্রামের মিন্টু মোল্লা ও তিন ছেলে-মেয়ে শাহনাজ বেগম, মাসুদ মোল্লা এবং রানা মোল্লা। কিন্তু আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বাদী মামলার এজহারে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ১৭ মাস আগে ছোট ছেলেটি জন্মের পরে তার স্ত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। আসামিরা তাদের পূর্ব পরিচিত, দুরসম্পর্কের আত্মীয় এবং পাশ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা। আসামি শাহনাজ বেগম এসে বাদীর স্ত্রীকে ভাল চিকিৎসার করার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা রাজি হন। গত ১ জানুয়ারি আসামিরা বাদীর বাড়িতে এসে তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য ভারতের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। ওই দিন বিকেলে আসামিরা সকলেই আবার বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু তাদের কাছে তার স্ত্রীর কথা জানতে চাইলে বলছে তাকে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
[219637]
এভাবে ২৫দিন পার হলেও স্ত্রীর সাথে কোনো যোগাযোগ করতে না পেরে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর কথা জানতে চান। কিন্তু তারা কিছু না বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে ভারতীয় একটি নম্বর থেকে বাদীর মোবাইলে তার স্ত্রী কল দিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। এছাড়া বাদীকে তার স্ত্রী বলেছে তাকে সেখানে একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ওই সময় বাদীর স্ত্রীর কাছ থেকে ফোনটি কেড়ে নিয়ে অজ্ঞাত এক মহিলা বলছে মোটা অংকের টাকা দিলে তার স্ত্রীকে ফেরৎ দিবেন নইলে তাকে জীবনে শেষ করে দেয়া হবে।
তাছাড়া তার স্ত্রীর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে। এরপর বাদী আসামিদের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর কথা জানতে চাইলে তারা এড়িয়ে যায়। এই ঘটনায় বাদী কোতয়ালি থানায় গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকার করে। ফলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি যশোর মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেন।
বিচারক মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) গোলাম কিবরিয়া অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পরবর্তী সাত কার্য্য দিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন। ১৫ মার্চ যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।
এসআই