রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে বিষ খাইয়ে সৎছেলে রিপনকে (৪) হত্যার দায়ে মা আকলিমা আক্তারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজবাড়ীর সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় দেন।
আকলিমা রাজবাড়ী সদর উপজেলার হাটবাড়ীয়া (শিবতলা) গ্রামের আক্কাস আলীর মেয়ে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১০ আগস্ট সকালে হযরত আলী গরু কেনার জন্য পাংশা থানার চর শাহমীরপুর এলাকায় যান। তার প্রথম স্ত্রী রেনু পারভীন গরুর ঘাস আনার জন্য মাঠে যান। তার মেয়ে শিরিন আক্তার (৮) চর ঝিকড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সেও সকালে স্কুলে গিয়েছিল। বাড়িতে তার দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা ও দুই শিশু ছাড়া অন্য কেউ ছিল না। ওইদিন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে পূর্ব শত্রুতার কারণে প্রথম স্ত্রীর ছেলে রিপনকে (৪) ঘরে থাকা কীটনাশক খাওয়ান দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা। তাৎক্ষণিক রিপন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। ফলে পাড়ার লোকজন তাদের বাড়িতে জড়ো হন।
আধা ঘণ্টা পর প্রথম স্ত্রী রেনু বাড়ি এসে রিপনের মুখ থেকে বিষের গন্ধ পেয়ে বুঝতে পারেন বিষক্রিয়ার কারণে সে কান্নাকাটি করছে। তখন তার বড় ভাই আ. রশিদ, তার স্ত্রী বানেছা ও তার চাচাতো ভাই সাইফুদ্দিনসহ রিপনকে চিকিৎসার জন্য পাংশা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে রিপনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে মারা যায় রিপন।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন ১১ আগস্ট বিকেলে রিপনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৫টার মরদেহ দাফন করা হয়। ছেলের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে রিপনকে কীটনাশক খাওয়ানোর কথা স্বীকার করেন আকলিমা। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার পর স্বামী হযরত আলী পাংশা থানা মামলা দায়ের করেন।
রাজবাড়ী জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট উজির আলী শেখ বলেন, এ রায়ে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে।
এমএস