টাঙ্গাইল: সোমালিয়া জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তির খবর শুনে এমভি আবদুল্লাহর নাবিক সাব্বির হোসেনের মা সালেহা বেগম বলেছেন, ‘সাব্বিবের সঙ্গে একটু কথা হয়েছে। সে বলেছে, ‘‘মা চিন্তা করো না, আমরা মুক্তি পেয়েছি, সবাই ভালো আছি।” এ কথা শোনার পর যেন মনটা ভরে গেল। ছেলের চিন্তায়, ঈদের দিন আনন্দ করতে পারিনি। একটা মাস কীভাবে কেটেছে, তা বলতে পারব না। আজ যখন ছেলে কল দিয়ে বলেছে, ‘‘মুক্তি পেয়েছি, ভালো আছি।” কথাটা শোনার পর থেকে যেন ঈদ মনে হচ্ছে। ছেলেকে কাছে পেলে আনন্দটা আরও বেশি বেড়ে যাবে, খুশি হব।’
রবিবার (১৪ এপ্রিল) নাবিক সাব্বির হোসেনের মুক্তির খবর শুনে তার পরিবারে খুশির বন্যা বইছে। সাব্বিরের বাসায় যেন আজ ঈদের আনন্দ লেগেছে।
ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সাব্বিরের বাবা হারুন অর রশীদ বলেন, ‘খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অপেক্ষায় থাকতাম ছেলে কখন খুশির সংবাদ দেবে। আজ সকালে সাব্বির কল দিয়ে বলে, ‘‘বাবা ভালো আছি চিন্তা করো না”। যেদিন আমার ছেলে আমার বুকে আসবে, সেদিন আরও বেশি আনন্দ পাব। মনটা ভরে যাবে আনন্দে।’
সাব্বিবের বোন মিতু আক্তার বলেন, ‘ভাইয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় এক মাস আমাদের বিষাদের দিন কেটেছে। সকালে এক-দুই মিনিটের মতো আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমি ও বাবা-মা কথা বলেছি। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া, সুস্থভাবে মুক্তি পেয়েছে।’
সাব্বির হোসেন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। নাগরপুরের সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন তিনি। টাঙ্গাইল শহরের কাগমারি এম এম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে সবশেষ ২০২২ সালের জুনে এমভি আবদুল্লাহর পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর তারা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিষয়টি মালিকপক্ষ সরাসরি স্বীকার না করলেও মুক্তিপণ দিয়েই জাহাজটিকে মুক্ত করেছে তারা। ১৪ বছর আগে একই মালিকের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণিকেও একইভাবে মুক্ত করে কেএসআরএম গ্রুপ।
এমএস