কুমিল্লা: ভুল চিকিৎসায় হুমাইরা নামে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২১ এপ্রিল) বিকাল আনুমানিক ৫টায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। তখন স্বজনদের আর্ত চিৎকারে হাসপাতাল ভারি হয়ে ওঠে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের পান্তি গ্রামের সুমন মিয়ার শিশুকন্যা হুমাইরাকে (৪) রবিবার বেলা ২টায় মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
হুমাইরার শরীলে জ্বর বেশী দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার ফারজানা আক্তার শিউলি হাসপাতালে ভর্তি দেন। ভর্তির পরই ওই রোগির পায়ুপথে ও হাতে ইনজেকশান দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরই রোগিটি অচেতন হয়ে পড়ে। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার সারমিন আক্তার রোগি মারা যাওয়ার বিষয়টি গোপন রেখে ইসিজি করতে পাঠায়।
[221828]
স্থানীয় জান্নাত মেডিকেলে ইসিজি করার প্রস্তুতি নিলে কর্তপক্ষ মৃত রোগির ইসিজি করা সম্ভব নয় বলে জানায়। ফলে মৃত রোগিটিকে পুনরায় হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার সারমিন আক্তার আবারো রোগি মারা যাওয়ার বিষয়টি গোপন রেখে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
নিহত শিশু হুমাইয়ার মা জান্নাত আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বয়সের হারে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ দিয়ে ডাক্তার আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
নিহত শিশু হুমাইয়ার মামা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার ভাগ্নিকে পায়ুপথে ও হাতে একাধিকবার বিষাক্ত ইনজেকশান দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি আমার ভাগ্নি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা: সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, রোগিটিকে ডাক্তার ফারজানা আক্তার শিউলি ভর্তি দেন, পরে ডাক্তার সারমিন আক্তার মৃত ঘোষণা করেন। যতটুকু জানতে পেরেছি, ওই বাচ্চাটির সকাল থেকেই জ্বর ছিল। একাধিকবার খিচুনীও দেয়। চিকিৎসার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ডাক্তারগণ বলতে পারবে।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা: এনামুল হক বলেন, আমি জরুরী কাজে কুমিল্লায় ছিলাম। বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা: নাছিমা আক্তারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, রোগিটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।