সিলেটে পানিবন্দি সাড়ে ১০ লাখ মানুষ

  • সিলেট প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৪, ০৭:২২ পিএম

সিলেট : অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে অতি বন্যার কবলে পড়ে সিলেট অঞ্চল। তবে গত দুই তিন ধরে বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢল কমে যাওয়ায় কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। তবে এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। গতকাল শুক্রবার (২১ জুন) এ তথ্য জানায় জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবারের (২০ জুন) চেয়ে শুক্রবার দ্রুতগতিতে কমছে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি। এতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ১০ লাখ ৪৩ হাজার ১৬১ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টি ওয়ার্ডে  বন্যাদুর্গত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। ৭১৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ২৮ হাজার ৯২৫ জন।

[226056]

জেলা প্রশাসনের তথ্যে আরও জানা যায়, জেলার ১৫৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৩৬টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৬০২টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও ওসমানী নগর উপজেলায়।

শুক্রবার (২১ জুন) বেলা ১২টা পর্যন্ত সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্যমতে, সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগে থেকে অনেকটা কমেছে পানি।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ২০ মিলিমিটার। গত বৃহস্পতিবার ( দুপুর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। একইভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও কোনো বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া যায়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, শুক্রবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে পানি ৫ সেন্টিমিটার এবং একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০৩ ও শেরপুর পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

[226058]

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢল না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।

এদিকে ৫ দিন পর সিলেটের আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। শুক্রবার সকালে বিভিন্ন এলাকায় রোদ উঠতে দেখা গেছে। এতে বানভাসী মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।

তবে অনেকে অভিযোগ করছেন বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ সহায়তা মিলছে না। পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কাও বাড়ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের জন্য ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং ৬০০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উদ্ধার তৎপরতাও চলমান।

এমটিআই