দলের অবস্থান দেখে দলত্যাগ করে অপকর্মে লিপ্ত একটি চক্র 

  • ভোলা প্রতিনিধি  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম

ভোলা: রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান দেখে তৃণমূল পর্যায়ের একটি গ্রুপ লিপ্ত হন ভিবিন্ন প্রকারের অপকর্মে। তারই একটি গ্রুুপ সক্রিয় অপকর্মে লিপ্ত হয়ে প্রায় সতের বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দল বিএনপির মানক্ষুন্ন করতে মরিয়া উঠেছে সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চরে।
 
এ চক্রের মুল হোতা ইসমাইল বলে জানান স্থানীয় কামাল। সারাদেশে এক দফা দাবি আন্দোলনে জয়ী হয়ে ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ১নং প্রজেক্টে বীজয় মিছিল করেন সাধারণ জনতা।
 
ঐ দিন বীজয় মিছিলে নেতৃত্ব দেয়া কামাল ও সোহাগরা ১৭ বছরে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের ভিবিন্ন কুকর্ম তুলে ধরে স্লোগান দিলে তাদের স্লোগানে বিতর্কিত মনোভাব পোষণ করেন চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নকিব চেয়ারম্যানের মদদপুষ্ট কাচিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম সদস্য ইসমাইল, আব্দুর রব মেম্বার এর নির্দেশে এদল সন্ত্রাসী বাহিনী হামালা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ঘটনার দিন ৬ আগষ্ট খুব ভোরে সন্ত্রাসীরা মিছিলের নেতৃত্ব দেয়া সোহাগ, কামাল দের উপর চোরা গুপ্তা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় মিছিলকারীরা এলাকার ভিবিন্ন স্থানে ৭/৮ জন আহত হয়, পরে খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা আহতদের উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে একই এলাকার ফারুক দরবেশ এর পুত্র সোহাগকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করেন। দির্ঘ ১২ দিন মুমুর্ষূ অবস্থায় থেকে মোটামুটি সুস্থ হয়ে আজ ১৮ আগষ্ট ভোলায় ফিরেন সেহাগ। 

সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রের আঘাতে সোহাগের কন্ঠনালী বিকল হয় এবং সোহাগের মাথায় প্রচন্ড আঘাতের ফলে সোহাগের স্মৃতি শক্তি লোপ পয়। তবে সোহাগকে হত্যার উদ্দেশ্যেই মাথায় এবং গলায় আঘাত করা হয়েছে বলে ধারণা করছি বলে জানান কামাল। 

আহতরা জানান, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর এই সন্ত্রাসী বাহিনীর জুলমের স্বীকার হয়েছি, আমরা সাধারণ জেলে, দিন-মজুর, কৃষক আমরা নদীতে জাল পাতলেও তাদের চাঁদা দিতে হয়েছে। তাদের অপকর্মের স্বীকারে অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাজি রেখে আমি আমার ছেলেকে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করি।
 
আন্দোলনের বিজয়ে মিছিল করেছি বলে ওরা একদম ভোরে আমরা যার যার বাড়িতে ছিলাম কেউ কেউ ঘুমিয়ে ছিলেন এমন সুযোগে সন্ত্রাসী ইসমাইল  বাহিনীর ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপ আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। আমরা আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে দ্বিতীয় বারের মত স্বাধীন হওয়া দেশের শাসকদের নিকট এই চোরা গুপ্তা হামলার অভিযুক্ত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি। 

[230009]

স্থানীয়রা জানান, আহতরা চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে থাকার সুযোগে ঘটনার একদিন পরে অর্থাৎ ৭ই আগষ্ট ইসমাইলের বড় ভাই আবদুল কাদের  আহতদের পরিবারকে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা না করার জন্য হুমকি প্রদান করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইসমাইলকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এক সময় বিএনপি করতাম পরে আমার ব্যবসা রক্ষা করতে আওয়ামী লীগে যোগ দেই, ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরে ৬ আগষ্ট আমি আমার বিএনপি সমর্থক স্বজনদের কোনো প্রকার দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিতে গেলে কিচু লোক আমার উপর চড়াও হয়। 

পরে আমার ডাকে আমার স্বজন ও অনুসারীরা এগিয়ে আসলে সেখানে দুপক্ষের সংঘর্ষে সোহাগ নামের একজন লোক গুরতর আহত হয়। আহত সোহাগ মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছে জানি। তবে এই হতাহতের বিষয়টি জেলা বিএনপির নেতাদের অবগত করেছি তারা কাচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এ্যাডবোকেট ইউসুফ মিয়াকে সমঝোতা করার আদেশ দিয়েছে বলে জানান ইসমাইল। তবে ইসমাইলের বড় ভাই কাদের বিষয়ের অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান ইসমাইল। 

এই হতাহতের বিষয়ে অভিযুক্ত ঐ ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ইউসুফকে ক জানতে চাইলে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয় দোহাই দিয়ে তিনি বলেন, আমি এই হতাহতের ঘটনা বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমি পরিষদের চৌকিদার হিসেবে ছিলাম আমাকে অহেতুক দোষারোপ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে কাচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট ইউসুফ জানান ভিকটিম সোহাগ চিকিৎসা শেষে আজ ফিরে আমার সাথে দেখা করেছেন, সে এখনো কথা বলতে পারেনা। সে চাইলে আইনানুগ সহায়তা নিলে আমি এডভোকেট হিসেবে সহায়তা করতে পারি। তবে অভিযুক্ত ইসমাঈল আমার সাথে যোগাযোগ করেনি, যদি সে আমার কিংবা আমার দলীয় নেতা-কর্মী বিষয়টি সুরাহা করে দিবে এমন কথা বলে থাকে সে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
 
তাছাড়া ইসমাইল আমাদের দলে ছিলো এটা ঠিক নয়, অপরাধ করে সে আমার দলের হলেই সে নির্দোষ আমি বলতে পারিনা। ইসমাইল কোন দলে ছিল আবার কোন দলে যাবে সেটা তার ব্যাক্তিগত বিষয়, তবে আমার দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ কোনো নতুন-কর্মী বা সমর্থক আপাতত যোগ হওয়ার সুযোগ নেই। 

ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ আসলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এআর