কলাপাড়ায় প্রতিবন্ধীর টাকা এমপি, নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও ইউপি সদস্যের পকেটে

  • কলাপাড়া প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম

পটুয়াখালী: কলাপড়া উপজেলায় প্রতিবন্ধী, অসহায়, বন্যা দুর্গত ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের ভাতার নামে আওয়ামী লীগ নেতা, ইউপি সদস্য, সাংবাদিক ও তার নিজস্ব লোকদের টাকা দিতেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান মহিব।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সেবা) অসীম চন্দ্র বনিকের স্বাক্ষরিত গত ৯জুন ২০২৪ তারিখে একটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ১২৩ জন ব্যক্তির অনুকূলে তাদের প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। যার সর্বমোট টাকার পরিমাণ সাতলক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা।

১২৩ জনের তালিকায় রয়েছে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য অনন্ত মুখার্জি, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল ওয়ান স্টারের মালিক মাহবুব আকন, প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী, ধুলাসার ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ আলম, মহিপুর থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি কালাম ফরাজি, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী রইসুল ইসলাম শিবলু, ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফায়েল আহমেদ তপু, আলীপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ফকির-সহ তালিকায় বেশীরভাগ ব্যক্তিই সুস্থ, সচ্ছল ও প্রভাবশালী আওয়ামিলীগ নেতা।

[230826]

প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী জানান, প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে তার নেতাকর্মীদের নামে খামে করে টাকা পাঠাতেন। সেভাবে আমিও অনেক সময় পেয়েছি। তবে এই নাম কীভাবে যুক্ত করা হয়েছে বা কে দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। 

অনন্ত মুখার্জি বলেন, কর্মী সাংবাদিক তালিকায় ৫০০০ টাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসের মাধ্যমে একবার পেয়েছিলাম, অন্যকিছু আমার জানা নেই।

বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও ফী সাবীলিল্লাহ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মিছবাহ বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ তাকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু প্রতিবন্ধী ভাতা সুস্থ ও দলের মানুষদের দিয়ে তার প্রতি ঘৃণা বাড়িয়েছে। এটা আমার এলাকার জন্য চরম লজ্জার।

এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এটা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এসেছে। কে পাবে আর পাবে না সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব তার। সরকারি টাকা আমার মাধ্যম হয়ে এই টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ হয়ে গেছে এবং তালিকায় থাকা সবাই টাকা গ্রহণও করেছে।
 
এআর