দিনাজপুর: চিকিৎসার অভাবে দিন দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার শিশু শ্রেনিতে পড়ুয়া নুর। ওই এলাকার বৈগ্রাম গ্রামের সয়ফুল ইসলাম ও নুরজাহানের ছেলে সে। তার বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রী, আর মা গৃহীনি। স্থানীয় বৈগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনীতে লেখাপড়া করে নুর।
মা বাবার একমাত্র আদরের ছেলে নুর। সাড়ে পাঁচ বছরের এই শিশু ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট বা হার্টের ফুটো রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না তার বাবা মা। অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন সাড়ে তিন লাখ টাকা। সম্বল বলতে কিছুই নেই তাদের। দিনমুজুর বাবার পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব না হওয়ায় ছেলের চিকিৎসায় বিত্তবানদের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
নুরের প্রতিবেশীরা বলেন, এক সময়ের চঞ্চল এই শিশুটি এখন শুধুই নিঃশ্চুপ। সমবয়সী সবাই এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করলেও নুর তার রোগের কাছে অসহায়। শুয়ে না থেকে একটু চলাফেরা করতেই হাঁপিয়ে ওঠে সে, বন্ধ হয়ে আসে শ্বাস প্রশ্বাস। স্কুলে ভর্তি হলেও চলাফেরা করতে না পাড়ায় বেশ কিছুদিন ধরে স্কুলে যেতে পারেনা নুর। দিন যতই যাচ্ছে ততই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে নুর। ডাক্তার দ্রুত অপারেশন করার কথা বললেও টাকার অভাবে পারছেন না তারা।
নুরের বাবা- মা বলেন, তাদের দুটি সন্তান। একটি মেয়ে ও একটি ছেলে। মেয়ে লেখাপড়া করে ক্লাস সেভেনে আর ছোট ছেলেটিকে ভর্তি করায় শিশু শ্রেনীতে। পড়ালেখা শুরু করতেই থেমে যায় ছেলের শিক্ষাজীবন। হঠাৎ করে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পড়ে ডাক্তারী পরীক্ষায় জানা যায় ছেলেটির হার্টের ফুটো হয়েছে। প্রায় ১ মাস ঢাকাতে চিকিৎসা করার পর ডাক্তার বলেন অস্ত্রোপচার করার কথা। কিন্তু অস্ত্রোপচার করতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার প্রয়োজন। টাকার অভাবে ছেলের অস্ত্রোপচার করাতে পারছেন না তারা। গত ২ মাস থেকে বিছানায় পড়ে আছে শিশুটি। যতই দিন যাচ্ছে, ততই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে নুর। ডাক্তার দ্রুত অস্ত্রোপচারের কথা জানালেও টাকার অভাবে অস্ত্রোপচার করাতে পারছেন না মা-বাবা। তাই বিত্তবানদের নিকট সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন তারা। সকলের সহযোগীতায় পারে ছোট্ট শিশু ছেলেকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে। নুরকে সাহায্য পাঠানো যাবে তার বাবার ০১৭৫৫-২০৯৩৮৯ নগদ নাম্বারে।
বৈগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানাজ বেগম বলেন, আমরা তার বাবা- মায়ের কাছ থেকে শুনেছি নুর নাকি খুব অসুস্থ্য । চলাফেরা করতে পারছেন না। তার হার্টে ফুটো হয়েছে। আমরা যা পেরেছি তাকে সাহায্য করেছি। আর সরকার ও বিত্তবানরা যদি একটু সাহায্য করেন তাহলে ছেলেটি হয়তো আবার স্কুলে ফিরে আসতে পারবে।
বোয়ালদাড় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মশিউর রহমান বকুল বলেন, ছেলেটির বাবা অত্যন্ত গরিব, সম্পদ বলতে কিছুই নেই। তার ছেলে নুরের হার্টে ফুটো হয়েছে। এর জন্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা লাগবে। তাই সবার কাছে অনুরোধ ছেলেটির পাশে দাড়াতে। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বাচঁতে পারে নুরের প্রাণ।
এসএস