গাজীপুরে গ্যাসের তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকেরা 

  • গাজীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ১১:১৩ এএম
ফাইল ছবি

গাজীপুর: দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পাঞ্চল গাজীপুরে আবারও দেখা দিয়েছে গ্যাসের তীব্র সংকট। এতে করে শিল্পকারখানার পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও চাহিদার তুলনায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহকেরা। 

শিল্পাঞ্চলে গ্যাস সংকটে পড়ে কারখানার উৎপাদন থুবড়ে পড়েছে এমন একাধিক পোশাক শিল্প কারখানার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, একটি গার্মেন্টস কারখানায় প্রতি ঘনফুটে ১৫ পিএসআই গ্যাসের চাপ থাকতে হবে। এর মধ্যে ১/২ পিএসআই চাপ কম থাকলেও কোনমতে কারখানার উৎপাদন চালিয়ে রাখা সম্ভব ছিলো। 

তবে বর্তমানে সেখানে গ্যাসের চাপ নেমে এসেছে ২/৩ পিএসআই। যার ফলে এত কম পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ থাকায় কোন ভাবেই স্বাভাবিক উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই কারখানার মালিকেরা ডিজেল চালিত জেনারেটর দিয়ে কারখানা সচল রাখছেন। এতে করে পণ্য উৎপাদনে বিপুল পরিমাণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে গার্মেন্টস ব্যবসা। 

[234331]

জানা যায়, গাজীপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলা এবং পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন কারখানায় এই মহূর্তে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, ডাইং, নিটিং ছাড়াও আরও যেসব অন্যান্য রপ্তানি মুখি শিল্প কারখানা রয়েছে। প্রত্যেকটি কারখানায় গ্যাসের কম বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। 

কালিয়াকৈর উপজেলা এলাকার গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার সিইও জাহিদুর রহমান আনিস বলেন, গত কয়েক মাস ধরে গ্যাস সংকট চলছে। ১০ দিন ধরে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গ্যাস সংকটে ফ্যাব্রিকস ডাইং করাতে না পারায় প্রতিদিন লাখ-লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ব্রয়লার মেশিন চলে না, ডাইং মেশিন চালু দিলে গ্যাসের কারণে কাপড়ের রং বদলে যায়।শিপমেন্ট সময়মতো দেওয়া যাচ্ছে না। 

এ দিকে গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে কারখানার পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও এবার গ্যাসের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সঠিক সময়ে নারী শ্রমিকরা রান্নার কাজ করতে না পারায় গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার চাকরিজীবীরা নির্ধারিত সময়ে অফিস করতে পারছেন না। এতে করে তাদের হাজিরা বোনাসের টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। যার প্রভাবে তারা অর্থনৈতিক ভাবে সংকটে পড়ছেন। 

অপর দিকে সরেজমিনে,গাজীপুর মহানগরীর মধ্যে ভোগড়া, বাসন সড়ক, কড্ডা, কোনাবাড়ি এবং কালিয়াকৈর উপজেলার আওতাধীন মৌচাক এলাকায় গিয়ে জানা গেছে,এসব এলাকার বাসাবাড়িতে তীব্র গ্যাসের সংকট তৈরি হয়েছে। কোন এলাকায় সকাল থেকেই গ্যাসের চুলায় গ্যাস সরবরাহ থাকছেনা আবার কোন এলাকায় রাতে গ্যাস সরবরাহ থাকেনা। যার ফলে রান্নার কাজে লাকড়ি অথবা বোতলজাত গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে ভাড়াটিয়া গ্রাহকদের।এতে করে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন অনেক পরিবার। 

কালিয়াকৈরে উপজেলার মৌচাক এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দারা রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্যাস থাকায় বেশি টাকা দিয়ে একটা বাসা ভাড়া নিয়েছেন। অথচ এই বাসায় সকাল সন্ধ্যায় গ্যাসের চাম কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই লাকড়ি দিয়ে রান্না করে খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ভাবে চলতে থাকলে অর্থ নৈতিক ভাবে অচিরেই সংকটে পড়বেন বলে জানান তিনি।  

গাজীপুর তিতাসের উপমহাব্যবস্থাপক সুরুজ আলম বলেন, গ্যাস সরবরাহ কম এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এখানে আমাদের কোন হাত নেই। তিনি আরও বলেন, গাজীপুরে প্রতিদিন যে পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা আছে, সে পরিমাণ সরবরাহ নেই। সরবরাহ কম থাকায় বাসাবাড়ি ও শিল্পকারখানা উভয় দিকেই ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। উত্তোলনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

এমএস/এসআই