নড়াইলে নবগঙ্গা-মধুমতীর মিলনস্থলে নৌকা বাইচ

  • নড়াইল প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০২:৫১ পিএম

নড়াইল: কালিয়া উপজেলার বড়দিয়াতে নবগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বড়দিয়ার নবগঙ্গা-মধুমতী নদীর মিলনস্থলে এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি নামে। সেই বৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে।

প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ঘাটে চলে এসেছে ৫টি নৌকা। অপেক্ষা কখন বৃষ্টি থামবে। বৃষ্টির মধ্যেই প্রতিযোগিতা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলেন আয়োজকেরা। বেলা তিনটার পরপরই থেমে যায় বৃষ্টি, শুরু হয় প্রতিযোগিতা।

জানা যায়, বড়দিয়া বাজার এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে সাত দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। মেলার শেষ দিনে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে নবগঙ্গা-মধুমতী নদীর মিলনস্থলে আয়োজন করা হয় আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ৫ টি নৌকা। বাইচে আসা নৌকাগুলোর নাম ভাই–বোন স্বপ্ন তরী, মা শীতলক্ষ্যা, জয় মা কালী, মোবাইল বাচাড়ি ও তুফান। নদীর দুই পাড়ে থাকা হাজারো দর্শনার্থী। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে নদীপাড়ে মানুষের ঢল নামে।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি থেকে পরিবার নিয়ে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছেন ইজিবাইকচালক মো. সেলিম শেখ। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে নৌকাবাইচ দেখার অভ্যাস। এটি আমার খুবই প্রিয়। তাই পরিবার নিয়ে আনন্দ করার জন্য এখানে এসেছি।

[235429]

নূর হোসেন বলেন, উৎসুক মানুষের এই ভিড় থেকে বোঝা যায়, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচের প্রতি আগ্রহ কতটুকু। নদীমাতৃক বাংলাদেশে যেখানেই নদী আছে, সেখানে স্থানীয় মানুষ, প্রশাসন ও সরকারকে বলতে চাই, প্রতিবছর নদীতে এমন প্রতিযোগিতামূলক নৌকাবাইচের আয়োজন করুন।

আয়োজকেরা জানান, নবগঙ্গা নদীর বুক থেকে শুরু হয়ে দুই কিলোমিটার দূরে মধুমতীতে গিয়ে শেষ হয় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। চারটি ধাপে সম্পন্ন হওয়া এই প্রতিযোগিতা চলে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। চূড়ান্ত পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে গোপালগঞ্জের মোবাইল বাচাড়ি, রানার্সআপ হয়েছে বাশুড়িয়ার তুফান, তৃতীয় হয়েছে জয় মা কালী। 

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম। প্রধান অতিথি ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা আজরিন তন্বী।

মেলা উদ্‌যাপন কার্যনির্বাহী পরিষদের আহ্বায়ক ও খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি এম বরকত উল্লাহ বলেন, বড়দিয়ায় লক্ষ্মীপূজার মেলা দেড় শ বছর আগে থেকে হয়ে আসছে। মাঝে দীর্ঘ ১৮ বছর শুধু মেলা হতো। নৌকাবাইচ বন্ধ ছিল এ বছর আবার আয়োজন করেছেন। ভবিষ্যতে এ আয়োজন অব্যাহত থাকবে এবং আরও অনেক ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এলাকার মানুষ যাতে সুস্থ ধারার সংস্কৃতিচর্চা করতে পারে এবং বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য যাতে আমরা ধরে রাখতে পারি এবং নবায়িত করতে পারি। 

এআর