সিলেট: সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে পুরো কলেজ প্রদক্ষিণ করে কলেজের প্রধান ফটকে গিয়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবরে তারা স্মারকলিপি প্রদান করেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষেও শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম সাকিবের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, চতুর্থ বর্ষের জয়িতা বণিক, আশিষ সেন, কাব্য ওঝা, কুলসুম আক্তার, তৃতীয় বর্ষের তাহারিয়া ইয়ামিন অর্থি, প্রথম বর্ষের পাবেল মিয়া প্রমুখ।
[236611]
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, পরিসংখ্যান বিভাগ একটি ঐতিহ্যবাহী বিভাগ। এখন প্রায় ২০ টি ব্যাচ অনার্স শেষ করতে যাচ্ছে। কিন্তু সেইক্ষেত্রে আমাদের মাত্র একজন শিক্ষক আছেন। যেটা একেবারেই কাম্য নয়। প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ৪ টা পোস্ট। সেটাও আমরা আশা করি না। অন্যান্য বিভাগে ১২ জন ১৩ জন করে শিক্ষক আছেন। সেখানে পরিসংখ্যানে মাত্র একজন শিক্ষক। পরিসংখ্যান এমন একটা বিষয়, যেখানে শিক্ষক ছাড়া পড়া কোনোভাবেই সম্ভব না। পরিসংখ্যানে কোনো শিক্ষক পদায়ন নেই এবং পদায়নের জন্য সেভাবে কোনো ব্যবস্থাও নেই। আমাদের শিক্ষক না থাকার কারণে রেজাল্টে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। যার কারণে আমরা আমাদের ভালো ফলাফল দ্বারা সেরাদের লিস্টে আসতে পারতেছি না। কিন্তু, আমরা জানি আমাদের যথেস্ট ক্যাপাবিলিটি আছে। আমরা পড়তে চাই এবং আমরা চাই আমাদের শিক্ষক দ্বারা যাতে ক্লাস হয়। এরকম ছন্নছাড়া ডিপার্টমেন্ট আসলে আমরা আশা করি না। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরব হবেন এবং খুব তাড়াতাড়ি শিক্ষক সংখট দূর করবেন। যেহেতু এখন নতুন বাংলাদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ, সেহেতু আমরাও নতুন ডিপার্টমেন্ট নিয়ে কাজ করতে চাই।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, এমসি কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) চালু হয় ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষে। একই বিভাগে স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স চালু হয় ২০১১ সালে। পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকের ১৩০টি সিট ও স্নাতকোত্তরের ৬৫টি সিট রয়েছে। বিভাগে একজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষকের পদ সৃষ্ট আছে। কিন্তু, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে পরিসংখ্যান বিভাগে মাত্র একজন সহযোগী অধ্যাপকের অধীনে চলছে পাঠদান থেকে শুরু করে ডিপার্টমেন্টের সকল কাজ। বর্তমানে পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতক, মাস্টার্স, মাধ্যমিক ও ডিগ্রির শিক্ষার্থী রয়েছেন প্রায় হাজারখানেক। শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একজন শিক্ষকের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না শ্রেণিকার্যক্রম অব্যাহত রাখতে। শিক্ষকের অভাবের কারণে নিয়মিত কলেজেও আসেন না শিক্ষার্থীরা। এতে করে তাদের ফলাফলে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
[236619]
এবিষয়ে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ বলেন, নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় পরিসংখ্যান বিভাগে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়েই পাঠদান চালিয়ে যেতে হচ্ছে। একজন শিক্ষক দিয়ে কোনোভাবেই একটি ডিপার্টমেন্ট চালানো সম্ভব না। এই বিভাগে শিক্ষক পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে বারবার স্মারকলিপি ও পত্র পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহেও সিনিয়র সচিব বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্টরা এবিষয়ে জোর পদক্ষেপ নিবেন।
এসএস