গাজীপুর : গাজীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে ঢাকা—ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে পোশাক শ্রমিকরা।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মহাসড়কটি অবরোধ করে পোশাক শ্রমিকরা। নির্ঘুম রাত কাটানোর পর রোববার (১০ নভেম্বর) সকালেও মহাসড়কটি অবরোধ করে রেখেছেন তারা। এতে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে ঢাকা—ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাাহিনীর কোন আশ্বাসের কথাই শুনতে নারাজ শ্রমিকরা। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সড়কেই অবস্থানের পক্ষে অনড় তারা। মহাসড়কে হাজার হাজার মানুষের চরম ভোগান্তির কথা জানলেও শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা পর্যন্ত সড়কেই অবস্থানের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।
[236795]
শ্রমিকরা শনিবার দুপুর থেকে অবরোধ সরিয়ে নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আশ্বস্ত করলেও সারারাত অবরোধ অব্যাহত রাখে তারা। রাতভর শ্রমিকরা মহাসড়কে অবরোধ করে রাখেন।
বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুর মহানগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় ঢাকা—ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে টিএনজেড অ্যাপারেলস্ লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দেশের ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তি আর অবর্ণনীয় দুর্ভোগে।
উত্তরবঙ্গ নওগাঁ থেকে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আসা যাত্রী শরিফ আহমেদ বলেন, সকালে ভোগড়া বাইপাস মোড়ে বাস থেকে নেমে ঢাকায় যাওয়ার কোনো যানবাহন না পেয়ে দুই সন্তান স্ত্রী ও দুটি ব্যাগ নিয়ে অনেক কষ্ট করে এক কিলোমিটারের মতো পথ হেঁটে এসেছি। এখন আর পারছি না। আরো এক কিলোমিটার পথ হেঁটে পার হলে কিছু একটা পাওয়া যেতে পারে।
নির্ঘুম রাত কাটানো শ্রমিক রেহেনা আক্তার বলেন, আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। পুলিশ ও প্রশাসন বারবার আমাদের বকেয়া বেতন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে আমাদের দাবি মেটানো হয়নি। বাসা ভাড়া, দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছি না। ঘরে খাবার নেই, সন্তানকে বাবার কাছে রেখে আমি বেতনের দাবিতে সারারাত রাস্তায় কাটিয়েছি।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ—পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধের কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দক্ষিণ দিকে টঙ্গীর কাছাকাছি যানজট গিয়ে পৌঁছায়। অনেক গাড়ি বিকল্প পথে চলাচল করছে। এছাড়াও মহাসড়কে অনেকগুলো ড্রাইভারসন আছে সেগুলো দিয়ে চালক ও যাত্রীরা চলাচল করছে। আমরা মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
[236784]
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ—পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) নাজির আহমেদ বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ বার শ্রমিকদের সাথে আমরা দফায় দফায় আলোচনা করেছি। মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত তাদের বকেয়া আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এমটিআই