রংপুর: জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় ধান্দাবাজি শুরু করে দিয়েছি। এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হতে হবে। আমরা পুলিশকে আবারও বলেছি, এই যে ভুয়া মামলা হচ্ছে আমাদের সকলের এগুলো থেকে বের হতে হবে। শুধু রংপুরে নয় বাংলাদেশের সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে কঠোর ভাবে বলতে চাই, আমাদের শহীদ ভাইদেরকে নিয়ে বাণিজ্য চলবে না।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ আয়োজনে এসব কথা বলেন সারজিস।
[237309]
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আক্তার পুলিশের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দীন, জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ প্রমুখ।
সারজিস আলম বলেন, যেই সম্পৃক্ত হোক যদি মনে হয় যে এটাই ষড়যন্ত্রমূলক হচ্ছে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকে কোন মামলায় নাম দিয়েছে মানেই গ্রেপ্তার করা যাবে না। টাকা দিয়ে নাম দিচ্ছে আবার টাকা দিয়ে নাম কাটাচ্ছে এই ব্যবসা সামগ্রিকভাবে বন্ধ করতে হবে। যারা এটা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সামগ্রিকভাবে কাজ করলে তারা এটা করতে পারবে না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যেতে চাই।
উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা দেওয়ার বিষয়ে সারজিস বলেন, উপদেষ্টা কাকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তিনি ওইটার কতটুকু যোগ্য?এরকম কি একজনও নাই তিন বিভাগে যে উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্য? সেই জায়গা থেকে আমরা বলেছি আমাদের এই কোয়ালিটি একটা প্যারামিটার হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার হচ্ছে ২৪ এর আন্দোলনে কে সঙ্গে থেকেছে, কে নিরব ছিল, কে বিপক্ষে ছিল, যার অংশগ্রহণ সরাসরি ছিল, যারা নির্যাতিত এবং জনমানুষের কথা বলে এসেছে তার প্রাধান্য সবার আগে হওয়া উচিত। যে মানুষটা সরাসরি প্রতিনিধিত্ব করতে না পারলেও সাহস যুগিয়েছে তাকেই দেওয়া উচিত।
মোস্তফা ফারুকী উপদেষ্টা হওয়ার বিষয়ে বলেন, এই আন্দোলনে ফারুকী কোন সময়ে ছিলো, ৩৬ জুলাই সরকারের বিপক্ষে গিয়ে তিনি ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল? কখনোই নয়। তিনি তার সময়ে ক্ষমতার কাছাকাছি যাওয়ার জন্য যেভাবে তোষামদি করার দরকার সেটি করেছে। এই ফারুকীরা কিভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসে?আমরা সেদিনই বিরোধিতা করেছি এরকম কঠিন সময় নীরব থাকা এবং গা বাচিয়ে চলা লোকজনকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চাই না। যে আন্দোলন করেছিল বা ধারণ করছিল তাদেরকে দিয়েই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হওয়া উচিত।
[237308]
আক্তার হোসেনকে উপদেষ্টা করার বিষয়ে তিনি বলেন, আখতার ভাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বড় ভাই। এই আন্দোলনে পুরো সময়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। পুরো সময়ে তিনি এই আন্দোলনে ছিলেন। তিনি প্রত্যেকদিন আমাদের সাথে ছিল মঞ্চের সামনে ছিল বা মঞ্চের পিছনে ছিল, কিন্তু ছিল। কখনোই আমাদেরকে ছাড়েননি আমাদের অগ্রজ হিসেবে। উত্তরবঙ্গের একজন রিপ্রেজেন্টেটিভ দিতে হবে তার মানে ব্যক্তি সার্জিসকে দিতে হবে কখনোই নয়। সেই জায়গা থেকে আক্তার ভাইকে দিতে হলে আক্তার ভাই। বা অন্য কাউকে যদি নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের স্পেশালিস্ট মনে হয় এবং যদি মনে হয় যে ফ্যাসিস্টের সাথে সম্পৃক্ততা ছিল না যদি মনে হয় ফ্যাসিসদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তার স্পিড আছে পার্সোনালিটি আছে, পার্সোনাল ডিগনিটি আছে, এবং অন্য যে কেউ হয় তার ওই যোগ্যতা আছে তাকেই নেওয়া যাবে। দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য যাকে উপযুক্ত মনে হবে ভালো মনে হবে তাকেই নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আমরা জীবনের মায়া করিনি যারা রাজপথে ছিল, জীবনে ঝুঁকি নিয়ে ছিল, যারা ওই রাজপথে ছিল তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ঝুঁকি ছিল। যেকোনো মুহূর্তে ওই ফ্যাসিস সরকারের বুলেট বৃদ্ধ করতে পারতো।
[237291]
নিজেকে উপদেষ্টা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমাকে উপদেষ্টা তৈরি করার ব্যাপারে স্পষ্ট বলতে চাই, যে মানুষটি যেকোনো সময় জীবন দিতে প্রস্তুত ছিল, এখনো আছে আর ভবিষ্যৎ থাকবে, তাকে যদি দেশের মানুষের জন্য কোন একটি দায়িত্ব দেওয়া হয় তার সেটি নিতে কোন পিছুটান থাকবে না। যে ক্ষমতা মানুষকে দূরে সরায় সেই ক্ষমতা আমরা চাই না।
এসএস