কুমিল্লা: কুমিল্লার ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত এইচ আর হাসপাতালে ইসরাত জাহান এরিন (২০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
রোগীর পরিবারের দাবি, চিকিৎসকের ভুলে তাদের মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতায় অবৈধ হাসপাতালটি এখনো নিরবচ্ছিন্নভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নিহত ইসরাত জাহান এরিন কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের সিমপুর এলাকার বাসিন্দা। তার পরিবারের অভিযোগ, অপারেশনের সময় চিকিৎসকের গাফিলতিতে নাড়ি কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। পরিবারটি এ ঘটনায় সঠিক বিচার দাবি করেছে।
[238341]
এদিকে, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এইচ আর হাসপাতালের পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। ছাড়পত্র ছাড়া এমন একটি প্রতিষ্ঠান কিভাবে বছরের পর বছর কার্যক্রম চালাচ্ছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তা মোসাব্বের হোসেন বলেছেন, ‘পরিবেশগত অনুমোদন ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা আইনত অপরাধ। তবে এখানে আমাদের কোন হাত নেই। হাসপাতালগুলোতে অভিযান পরিচালনা করবে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এ বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব সিভিল সার্জন কর্তৃপক্ষের।’
এদিকে, এই বিষয়ে সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেগুলোর দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি৷ প্রশাসন এই বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোপ প্রকাশ করেছেন নিহত এরিনের বাবা মো. মোবারক হোসাইন। তিনি বলেন, তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। বরং অভিযুক্ত হাসপাতালটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
এদিকে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। তারা বলছেন, অনুমোদনহীন হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা মইন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দিনের পর দিন অবৈধ হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম দেখে আসছি। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা সাধারণ মানুষের জন্য চরম বিপদ তৈরি করছে।’
[238355]
নিহত প্রসূতি এরিনের পরিবার এবং স্থানীয় জনগণ অবৈধ হাসপাতাল বন্ধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি দায়ী চিকিৎসক এবং হাসপাতাল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রশাসনের এমন উদাসীনতা সমাজে অপ্রত্যাশিত দৃষ্টান্ত তৈরি করছে বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার কে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায় নি।
এসএস