৩ ঘণ্টায় দেড় লাখ টাকার ইলিশ-খিচুড়ি বিক্রি হয় কুয়াকাটায়

  • জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, কুয়াকাটা | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৪, ০৫:৫৬ পিএম
৩ ঘণ্টায় দেড় লাখ টাকার ইলিশ-খিচুড়ি বিক্রি হয় কুয়াকাটায়

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পর্যটন স্পট কাউয়ার চর। যেখানে সূর্য উদয়ের সাথে পর্যটকরা উপভোগ করেন ঝাউবন, লাল কাঁকড়া, অতিথি পাখি ও জেলেদের মাছ ধরার অবিরাম দৃশ্য।

কাউয়ার চরে চোখ জুড়ানো সৈকত, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে দেখতে চোখে পড়ে যাবে এক ঝাঁক মোটরসাইকেলের বেষ্টনী। কাছে যেতেই দেখা মিলবে দুচালা কয়েকটা টিনের লম্বা খাবার হোটেল। যেখানে সূর্য উদয়ের সাথে সাথে গরম তেলে ভাজা হচ্ছে গভীর সমুদ্রের তাজা ইলিশ, যার সুমধুর ঘ্রাণ পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। তবে হোটেলগুলো দেখতে শুনতে খুব চাকচিক্যময় না হলেও, এখানকার তরুণ উদ্যোক্তা মিরাজ সিকদারের শুরু করা ইলিশ-খিচুরী সহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টের খাবার যেন আপনাকে স্বাদের পূর্ণতা এনে দিবে। ঠিক ৭ টা থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত খুব জমজমাট থাকে এই স্থানের ছয়টি ইলিশ খিচুড়ির দোকান। আর এই দোকানগুলোতে প্রতিদিন সামান্য কয়েক ঘণ্টায় বিক্রি হয় প্রায় দেড় লাখ টাকার ইলিশ-খিচুড়ি।

কুয়াকাটা সৈকত থেকে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত কাউয়ার চর নামক স্থানটি। এটি বেশ জনপ্রিয় পর্যটকদের কাছে।পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ার কারণে ১২ বছর আগে এখানে ছোট চায়ের দোকান নিয়ে বসেন মিরাজ শিকদার। প্রতিদিন সূর্যোদয় দেখতে পর্যটকদের আগমন বাড়তে থাকায় নতুন খাবার উপহার দেওয়ার জন্য তিনি শুরু করেন ইলিশ-খিচুড়ি বিক্রি। শুরুর পর তিনি এতে লাভের মুখ দেখতে থাকেন। তার দেখাদেখি এখন সেখানে ৬টি দোকান রয়েছে। এই ৬ টি দোকানে প্রতিদিন বেচা বিক্রি হয় প্রায় দেড় লাখ টাকার। তবে সিজনে এর থেকেও বেশি বিক্রি হবে বলে এমনটা জানিয়েছেন দোকান মালিকরা।

দোকান মালিক মিরাজ শিকদার বলেন, ভোর ৫ টার দিকে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, অটোভ্যানে করে অসাধারণ এই ম্যানগ্রোভ বন, ও সূর্যোদয় দেখতে ছুটে আসে পর্যটকেরা। নতুন খাবারে পর্যটকদের মন রাখতে এক পিস ইলিশসহ খিচুড়ি মাত্র ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করছি।আবার পর্যটকরা তাদের পছন্দমতো বড় ইলিশ কিনে সবাই মিলে শেয়ার করেও খেতে পারেন। তার সঙ্গে পেয়ে যান মাছের ভর্তা ফ্রি। যা খেয়ে মুগ্ধ হন পর্যটকরা।

শুধু দামই নয়, সমুদ্র থেকে নিয়ে আসা জেলেদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তাজা ইলিশ সাজানো থাকে থরে থরে। যার যেটা পছন্দ সেটাই পর্যটকদের সামনে কেঁটে, মশলা মেখে, ভেজে দেন।

সৈকতে ঘুড়তে আসা পর্যটক ঝর্ণা রানী জানান, সূর্য উদয়ের স্থান কাউয়ার চরে এতো স্বল্পমূল্যে সুস্বাদু খাবার খেতে পেরে আমরা খুব আনন্দিত।এটাকে একটু পরিচর্যা করলে আরও ভালো কিছু উপহার দিতে পারবে বলে তিনি জানান।

ভ্রমন পিপাসু মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় টুর গাইডরাও এই গরম খিচুড়ি ও ইলিশের স্বাদ নেয়। মোটরসাইকেল টুর গাইড মোশারফ বলেন, ধোঁয়া উঠা গরম খিচুড়ির সাথে সুগন্ধ ছড়ানো ইলিশ ভাজা খেয়ে মুগ্ধ হয় পর্যটকরা। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও এমন সাশ্রয়ী মূল্যে সুস্বাদু খাবার খেতে পেরে অনেকটা আনন্দিত হন তারা।

কুয়াকাটার এই সম্ভাবনামায় পর্যটন স্পটে দুটি টয়লেট ছাড়া তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা নেই পর্যটকদের জন্য। পরিকল্পিতভাবে কাউয়ারচরে স্পটটাকে যদি সাজানো হয়, পর্যটকের আগমন আরও ঘটবে এমনটাই আশা স্থানীয়দের।

এসএস