বরিশাল: যে বয়সে মাঠে ক্রিকেট খেলা, স্কুলে ছোটাছুটি আর নানা বাড়ি বেড়ানোর উত্তেজনায় মেতে ওঠার কথা, সেই ১২ বছর বয়সেই জুবায়ের আল মাহমুদকে লড়তে হচ্ছে বিরল এক রোগের সঙ্গে। জন্ম থেকেই রক্তনালী টিউমার (হেমানজিওমা) নামক এক মারণ ব্যাধি জুবায়েরের জিহ্বাকে অস্বাভাবিকভাবে বড় করে তুলছে। খাওয়াদাওয়া, কথা বলা, এমনকি ঘুম-সবই তার জন্য অসহনীয় কষ্টের কারণ। সারাক্ষণ জিহ্বার ভার বহন করতে করতে জীবন থেকে যেন হারিয়ে যাচ্ছে তার শৈশবের রঙিন মুহূর্তগুলো।
[239984]
পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ ইউনিয়নের ছারছিনা দরবার শরীফের পেছনের একটি ছোট্ট গ্রামে বসবাস করে জুবায়েরের পরিবার। তিন ছেলের মধ্যে বড় জুবায়ের। তার বাবা আমিনুল ইসলাম একজন অটোরিকশা চালক। ছেলের চিকিৎসার জন্য জমিজমা, দোকানসহ যা কিছু ছিল সব বিক্রি করেও এই ভয়াবহ রোগের সমাধান মেলেনি। ভারতে চিকিৎসার জন্য ভেলোরে ছেলেকে নিয়ে গেলে ১৬ লাখ টাকা খরচ হলেও লাভ হয়নি। এখন আরও ২৫-৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে, যা পরিবারের পক্ষে সংগ্রহ করা অসম্ভব।
জুবায়েরের বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকেরা জিহ্বা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এতে বোবা হয়ে বেঁচে থাকতে পারবে জুবায়ের। কিন্তু আমরা চাই না ও বোবা হয়ে বাঁচুক। জমিজমা বিক্রি করেছি, অটো চালিয়ে কোনও মতে খাওয়ার ব্যবস্থা করছি। এখন দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য সহযোগিতা চাই। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন জুবায়ের। জিহ্বা বড় হয়ে সবসময় মুখের বাইরে থাকে, যা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। এতে করে খেলাধুলা, পড়ালেখা তো দূরের কথা, খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত ঠিকমতো করতে পারে না সে। এই অবস্থায় পরিবারটি অসহায়ভাবে সবার কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।
[239947]
বরিশাল জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, গণমাধ্যমে জুবায়েরের অবস্থা জানতে পেরে তাকে অফিসে ডেকে সাহায্য করা হয়েছে। ইভেন্ট-৮৪ নামে একটি গ্রুপের মাধ্যমে আমরা তাকে ৮ হাজার টাকা দিয়েছি। পাশাপাশি পিরোজপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরও তাকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করবে। তিনি দেশবাসীকে এই শিশুটির চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
সন্তানকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দেশবাসীর সহযোগীতা চেয়েছে জুবায়েরের পরিবার। শিশুটিকে সাহায্য করতে চাইলে যোগাযোগ করা যাবে তার বাবার ব্যক্তিগত ০১৭৫৩-৮৫৬৯৭৬ নাম্বারে।
এসএস