নিয়ম বহির্ভূত বহুতল ভবনের ফাইলিং

লক্ষ্মীপুরে সড়ক দেবে বিচ্ছিন্ন, ফাটলসহ আশপাশের ভবন ঝুঁকিতে 

  • লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৫, ০১:৩২ পিএম

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে ওয়ে হাউসিং কোম্পানীর নিয়ম বহির্ভূত বহুতল ভবনের ফাইলিংয়ের কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দেবে বিচ্ছিন্নসহ পাশে থাকা দুটি দোকান ও একটি কবরস্থান ভেঙে গেছে। এতে আশপাশের ভবনগুলো ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ঘটনায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় সহশ্রাধিক পরিবারের রান্নাবান্না অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। 

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ২ টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাখারি পাড়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

পৌর কর্তৃপক্ষ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, ভেঙে যাওয়া দোকানগুলোর পেছনে একটি পুকুর রয়েছে। হাউসিংয়ের অনিয়ন্ত্রিত ফাইলিংয়ের কারণে মাটির তলদেশ পানির স্তর সৃষ্টি হয়। ভেক্যু দিয়ে সম্প্রতি প্রায় ৩০ ফুট মাটি খুড়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলো হাউসিং কোম্পানী। এতে মাটির তলদেশে সৃষ্টি হওয়া স্তর দিয়ে পানি নির্মাধীণ এলাকায় ঢুকে পড়ে। একপর্যাতে পানির চাপ বেড়ে রাস্তা দেবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পাশের দুটি দোকান ভেঙে গেছে। যুক্তবাংলা আইন পরিষদের সদস্য মরহুম আব্দুল হাকিম উকিলের কবরস্থান ভেঙে যায়। এখন ফাটলসহ আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক শাহিন কাদির রিপন বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ফাইলিংয়ের কারণেই মাটি সরে গিয়ে আমার দুটি দোকান ভেঙে গেছে। এতে আমার অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

স্থানীয় ভবন মালিক শামছুল আলম বলেন, নিয়ম বহির্ভূত ফাইলিংয়ের কারণেই সড়কে দেবে গেছে। পাশে দুটি দোকান ভেঙে গেছে। আমার ভবনটি এখন ঝুঁকিতে রয়েছে। 

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয় ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, লাইনে আগুন ধরে যাওয়ার কারণে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামি রোববার কুমিল্লা থেকে লোকজন এসে কাজ করবে। কাজ শেষে গ্যাস সংযোগ চালু হবে। 

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল বলেন ওয়ে হাউসিংকে ৭ তলা ভবনের অনুমতি দিয়েছি। তারা ১০ তলা ভবনের অনুমতি নিয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই। ফাইলিং নিয়ম অনুযায়ীই চলছিল। কিন্তু পাশেই পুকুর থাকায় মাটির নিচ দিয়ে পানির স্তর পেয়ে যায়। যার কারণে সড়কটি দেবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে সড়ক আর ড্রেনের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আপাতত তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ ও সড়ক সংস্কার শেষ হলেই কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। আপাতত সড়কটি বন্ধ রাখা হয়েছে। 

ওয়ে হাউসিংয়ের এজিএম হাসান আহমেদ বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ীই কাজ করছি। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। আমরা ভবনটি ১০ তলা করবো। পৌরসভা থেকে ৭ তলার অনুমোদন রয়েছে। আপাতত ওই ৭ তলা ভবনই হবে। সড়ক ও দোকান মালিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা দিয়ে দেবো। সড়কের যেন বেশি ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা ইতিমধ্যে মাটি ফেলে ব্যবস্থা নিয়েছি। 

জেইউবি/এসআই