খুলনায: পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লি. সাধারণ মানুষকে ভাবনাহীন নিরাপদ জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তিতে ফেলে হাজারো গ্রাহকদের মেয়াদ শেষ হলেও দিছেনা পাওনা টাকা।
গ্রাহকদের পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও পাওনা টাকার জন্য ছয় সাত বছর অফিসে যোগাযোগ করলেও টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা করছেন।
এ প্রতিবেদন করতে পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লি. এর কোনো কর্মকর্তাকে একদিনে পাওয়া সম্ভব না। প্রায় দুই মাস খোঁজা-খুঁজি করে প্রথমে পিয়ন তার পর কর্মকর্তা মনসুর, ও এপিপিকে এবং কোম্পানির খুলনা শাখার ম্যানেজারের মোবাইলে হাজার ফোনের পর যোগাযোগ হয়।
পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লি. এর কর্মকর্তা মুনসুর বলেন, হেড অফিস থেকে চেক না পাঠালে আমরা গ্রাহকদের টাকা কিভাবে পরিশোধ করব।
প্রতি মাসে গ্রাহকেরা যখন টাকা পরিশোধ করেছেন এখন তো তারা টাকা চাইবেই। আমাদের কাছে তো কোনো টাকা নেই। আমরা কোথা থেকে টাকা দিব। আমাদের কাছ থেকে হেড অফিস টাকা নিয়ে নিয়েছেন।
আর এখন মাঝেমধ্যেই গ্রাহকরা মারমুখী হয়ে পড়েন কেউ কেউ গায়ে হাত তোলেন আমরা অপারগ। হেড অফিসে জানালে তারা বলেন এখন টাকা নেই টাকা যখন হবে তখন দিব। হেড অফিস টাকা না দিলে আমরা কোথা থেকে টাকা দেব।
খুলনা পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লি. এর ইপিপি মো. বিল্লাল বলেন, গ্রাহকদের টাকা আমরা তো দিতেই চাই কিন্তু হেড অফিস যে কবে দিবে সেটা তো আমরা এখনও বলতে পারছি না। মাঝে হেড অফিস কিছু চেক ছেড়েছিল সেগুলো গ্রাহকদের দেয়া হয়েছে। এখন হেড অফিস কোন চেক দিচ্ছে না। হেড অফিস বলছে ফান্ড নাই। কোথা থেকে আমরা টাকা দিব। গ্রাহকরা এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সেসব সহ্য করতে হয় আমাদের। এখন তো অফিস বন্ধই রাখা হয়েছে মাঝেমধ্যে খোলা হয়।
খুলনা পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লি. এর ম্যানেজার হাবিবুর রহমান বলেন, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লি. ১৮ সালের দিকে মালিকানা পরিবর্তন হয়ে এস আলম গ্রুপ মালিকানায় আসেন। এরপর থেকেই এ সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এখনতো অফিস খুলে বসাই দায় হয়ে পড়েছে। গ্রাহকেরা এসে ভাঙচুর করছে। হেড অফিস টাকা না দিলে আমরা কিছু বলতে পারছি না।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলছে, খুলনায় পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লি. এ পলিসি খুলে ভোগান্তিতে পড়েছি। বোনাস তো দূরে থাক আসল টাকাই এক থেকে দুই বছর হয়ে গেছে পাচ্ছি না। ঘুরছি দ্বারে দ্বারে। পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্সের দুর্নীতির ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ সর্বোচ্চ হারিয়ে সর্বস্বান্ত।
[241490]
কোটি কোটি টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পলিসির নামে হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে এ সকল পলিসির টাকা পেতে গ্রাহকের কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যায়। এরপর তাদের প্রাপ্য বোনাস ও দেয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া কাঙ্খিত টেবিলে কর্মকর্তাদের অফিস সময় অনুযায়ী পাওয়া যায় না। এক পলিসির পিছনে তদবীর করতে করতে কালক্ষেপণ হয় বছরের পর বছর। তাও মিলছে না নিজের সঞ্চয়ী জীবনের শেষ সম্বলটুকু।
মইনুদ্দিন নামে একজন গ্রাহক বলেন, পদ্মা লাইফ ইনস্যুরেন্সের গ্রাহক সেবায় কর্মকর্তাদের নেই কোনো দায়বদ্ধতা। তারা বলছে প্রধান কার্যালয় থেকে চেক না দিলে আমরা কোথা থেকে দিব। আমরা কি প্রধান কার্যালয় কে টাকা দিয়েছি আমরা তো খুলনার কার্যালয়ে টাকা দিয়েছি এখন টাকা চাইলে বলেন, প্রধান কার্যালয়ে টাকা নেই টাকা আসলে দেয়া হবে। পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্সে পলিসি খুলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ এতে বীমা প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে।
এ বিষয়ে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইনসিওরেন্স লি. এর অভিযোগ করে একজন সদস্য বলেন, সবাই একই কথা বলে কারও এক বছর কারও দুই বছর মেয়াদ শেষ হলেও মিলছে না পাওনা টাকা।
মো. সেলিম, সুমাইয়া আক্তার, নাজমুল হোসেন, রবিউল ইসলাম, শাজাহান হাওলাদার, মো. মোস্তাকিম, রুমানা বেগম, নুরু মিয়া, এসব গ্রাহকের অভিযোগ খুলনায় পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স পলিসি মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩/৪ বছর কারো কারো ৬ বছর।
জীবনের শেষ সম্বল সামান্য কিছু প্রাপ্ত টাকা পাওয়ার আশায় দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে। আগেতো টেবিলে ধর না দিতে হতো। এখনতো টেবিলেই কাউকে পাওয়া যায় না।
এআর