ঢাকা: ঈদযাত্রা শুরুর পর গত দুই দিনে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে প্রায় সোয়া আট কোটি টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৪ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকার টোল আদায় করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে পরদিন শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত টোল আদায় হয় ৪ কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত দিয়ে ৩৬ হাজার ৯২৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে ২৪ হাজার ৩০৫টি এবং জাজিরা প্রান্ত দিয়ে ১২ হাজার ৬১৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত দুই প্রান্ত দিয়ে ৩৯ হাজার ৬৩৭টি যানবাহন পারাপার হয়।
এদিকে মহাসড়ক ও সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহন না থাকায় ঈদযাত্রায় স্বস্তির কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা। মাদারীপুরের চন্নোসা গ্রামের বাসিন্দা তারা মিয়া আজ রোববার মোটরসাইকেল নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বলেন, সড়ক ফাঁকা ছিল। তাই সকাল ৯টায় রাজধানীর ইস্কাটন থেকে রওনা হয়ে সকাল ১০টায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় পৌঁছান। টোল প্লাজা এলাকাও ফাঁকা। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে টোল পরিশোধ করতে পেরেছেন। এখন পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাবেন।
[246833]
তারা মিয়া বলেন, ‘৬ বছর ধরে ঈদ এলে এভাবেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করি। আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিমুলিয়া ঘাটে অপেক্ষার পর ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিয়েছি। পদ্মা সেতু হওয়ার পর সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছি। প্রায় সময় সেতু এলাকায়ও জটলায় পড়েছি। তবে এবার কোথাও কোনো ভোগান্তি হয়নি। ঈদযাত্রায় এবারের মতো স্বস্তি আর কখনো পাইনি।’
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর ঘরমুখী যাত্রীরা এবার নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরছেন বলে জানান মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. আল আমিন হোসেন। তিনি বলেন, সড়কপথে যাত্রী ও যানবাহন নিরাপদ ও ভোগান্তিবিহীন যাতায়াতের জন্য ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। গত দুই দিন ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পদ্মা সেতুমুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ থাকলেও আজ রোববার ছিল একেবারেই ফাঁকা। যানবাহন আসামাত্রই টোল পরিশোধ করে তাদের গন্তব্যে যেতে পারছে।
আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পদ্মা সেতু উত্তর থানা এবং টোল প্লাজা এলাকা ফাঁকা দেখা যায়। কিছু কিছু মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও যাত্রীবাহী বাসকে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলাচল করতে দেখা যায়। এসব যানবাহন কোনো রকম অপেক্ষা ছাড়াই টোল পরিশোধ করে গন্তব্যে যাচ্ছে।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে মো. লিমন সিকদার নামের এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি চাকরির সুবাদে লৌহজংয়ের খানবাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়ায়। লিমন বলেন, ‘পদ্মা সেতু এলাকায় থাকি, তাই প্রতিদিনের চিত্র আমার জানা। ঈদ আসবে, ঈদে বাড়িফেরা মানুষের চাপ সেতু এলাকায় হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক। তবে এবার কোনো রকম জটলা, ভোগান্তি দেখিনি। এমন সস্তির যাত্রা এর আগে কোনো ঈদে দেখিনি।’
এআর