পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে গত কয়েকদিন ধরেই মাঝারি ও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে দেখা দিলো শিলাবৃষ্টি। উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের মাজদিয়া এলাকাসহ কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বৃষ্টিতে দৃশ্যমান তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
বরঞ্চ চাষিরা বলছেন, রবি মৌসুম শেষ হতে চলেছে। তাই জমিতে এখন ধান ছাড়া তেমন ফসল নাই। কৃষকরা আবাদকৃত রবিশস্য সরিষা, মসুর, মটর, খেসাড়ি, গম, ধনিয়া ইত্যাদি ফসল জমি থেকে কেটে এনে মাড়াই করে ঘরে তুলেছেন। রবি শস্যকে কেটে আনার পর জমি গুলো ফাঁকা পড়ে আছে। জমিতে জো না থাকায় আবাদ করতে পারছেন না। আজকের বৃষ্টি তাদের ক্ষতি না হয়ে উপকারই হবে। বৃষ্টিতে জো আশা জমিগুলোতে তিল, পাট, মুগডালের আবাদ করতে পারবেন।
[247179]
লিচুর এলাকা খ্যাত জয়নগর মানিকনগর সলিমপুর সাহাপুর প্রভৃতি ইউনিয়নের চাষিরা বলছেন, মুকুলের পরিবর্তে এবার কচি পাতায় ছেয়ে গেছে লিচু গাছ। আমের মুকুলও কম এসেছে। এরমধ্যে বেশি শিলাবৃষ্টি হলে শেষ আশাটুকুও বিলীন হবে তাদের।
ঈশ্বরদীর চাষি ওবায়দুল করিম বলেন, ‘গতবছর গাছে ৯০-৯৫ শতাংশ মুকুল ছিল। এবার ৭৫ শতাংশই নেই, আছে ২৫ শতাংশ। কয়েকটা গাছে একটা-দুইটা করে এসেছে। এগুলো এখন ছোট্ট ছোট্ট গুটিতে রূপ নিয়েছে। এরমধ্যে যদি ঝড় বা শিলাবৃষ্টি হয়, তাহলে সব ঝরে যাবে।’
সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আইয়ুব আলী মৃধা বলেন, ‘এখন আমগাছে গুটি রয়েছে। বড় ধরনের ঝড় বা শিলাবৃষ্টি হলে এগুলো ঝরে যাবে। তবে আজকের বৃষ্টিতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। আজকের বৃষ্টিতে আমের গুটি শক্ত হয়েছে। শিলা পড়লেও আকারে ছোট থাকায়ও অল্প সময়ে থেমে গেছে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন বলেন, ঈশ্বরদীতে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঈশ্বরদীতে গত কয়েকদিন ধরেই মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ৪ এপ্রিল ৩৬ ডিগ্রি ও ৩ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
বৃষ্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন চৈত্র মাস। চৈত্র-বৈশাখ মাসে অপ্রত্যাশিতভাবেও অনেক সময় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে।
ঈশ্বরদী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার প্রহল্লাদ কুমার বলেন, আজকের যে বৃষ্টি হয়েছে তাতে ক্ষতির চাইতে লাভের পরিমাণই বেশি। ফসল আনার পর পড়ে থাকা জমি গুলোতে কৃষকরা আবাদ করতে পারবেন। আম গাছের গুটি ঝরার পরিমাণ কম হবে। তাই চাষিদের খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
আইএ