পরীমনির মামলায় রিমান্ডের অপব্যবহার হয়েছে: হাইকোর্ট

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ১০:১৯ পিএম

ঢাকা : চিত্রনায়িকা পরীমনির রিমান্ড বিষয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছেন, রিমান্ডের উপাদান ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা প্রার্থনা দিল, আপনি (ম্যাজিস্ট্রেট) মঞ্জুর করে দিলেন। এগুলো কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। রিমান্ড অতি ব্যতিক্রমী বিষয়।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

পরীমণির জামিন আবেদন নিয়ে নিম্ন আদালতের আদেশ বাতিল সংক্রান্ত রুল শুনানিতে আদালত এসব কথা বলেন।

গত ১৯ আগস্ট পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। এর বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন পরীমনি। এই আদালত ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন রাখেন। পরদিন আবেদন ‘আর্লি হিয়ারিং’ বা নির্ধারিত সময়ের আগে শুনানি চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। এতে ফল না পেয়ে ২২ আগস্টের ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে ২৫ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবী।

শুনানি নিয়ে ২৬ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল দেন। রুলে জামিন আবেদন শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। জামিন আবেদনের শুনানি দ্রুত (আর্লি হিয়ারিং) তথা দুই দিনের মধ্যে করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেইসঙ্গে বুধবার রুল শুনানির তারিখ রাখা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনিকে তিন দফায় সাতদিন রিমান্ডে নেওয়ার প্রেক্ষাপটে স্বতঃপ্রণোদিত রুল চেয়ে ২৯ আগস্ট একই বেঞ্চে একটি আবেদন দাখিল করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আজকের শুনানিতে পরীমনির রিমান্ডের বিষয়টি ওঠে।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, পরীমণির জামিন হয়েছে। তাই রুল এখন অকার্যকর হয়ে গেছে।

আদালত এসময় বলেন, জামিন হওয়ায় রুলের একটি অংশ নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আরেকটি অংশ রয়েছে।  এছাড়া পরীমণিকে বার বার রিমান্ডের বৈধতা নিয়ে আরেকটি আবেদন রয়েছে। সে বিষয়ে আমরা আদেশ দেবো। রিমান্ডের বিষয়ে একটি গাইড লাইন আছে। কিন্তু তারা সেটা অনুসরণ করেনি। আমরা এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিতে পারি।

আদালত বলেন, কিসের ভিত্তিতে রিমান্ড দিল সংশ্লিষ্ট কোর্টের রেকর্ড কল করতে পারি, ব্যাখ্যা চাইতে পারি।

গত ৪ আগস্ট ঢাকার বনানীর ১২ নম্বর রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে আটক করে র‌্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে মামলা করা হয়।

জব্দ তালিকায় পরীমণির বাসা থেকে 'মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য' উদ্ধার দেখানো হয়। তিন দফায় সাত দিন রিমান্ডের পর উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে গ্রেপ্তারের ২৬ দিন পর মঙ্গলবার জামিন পান তিনি। গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বুধবার সকালে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই