ঢাকা : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তৃতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ১০ নম্বর সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলামের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে তৃতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপসহ সিনহা হত্যা মামলার ১৫ আসামিকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তৃতীয় দফার দ্বিতীয় দিনে ১০ নম্বর সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলামের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া উপস্থিত অন্য সাক্ষীরা হলেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহীন আবদুর রহমান, ডা. রনধীর দেবনাথ ও সেনা সদস্য সার্জেন্ট আয়ুব আলী। আদালতে সাক্ষীরা প্রথমে জবানবন্দি দেবেন, পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের জেরা করবেন।
এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিন দিন প্রথম দফায় এক নম্বর সাক্ষী ও বাদী শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস ও দুই নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। একইভাবে গত ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর টানা চার দিন দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারি আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামিদে মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাক্ষি করা হয় ৮৩ জনকে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই