ঢাকা : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের বহুল আলোচিত রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর ‘শিগগিরই’ শুনানি হবে।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপনের পর বাছাই কমিটিতে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনাকালে ওই রিভিউ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সুপ্রিমকোর্ট রুলসের ‘এরর অ্যাপারেন্ট অন দ্য ফেস অব দ্য রেকর্ড’ গ্রাউন্ডে এই রিভিউ চেয়েছি। এ মামলায় রিভিউয়ের জন্য আমাদের যথেষ্ট মেরিটও আছে। আপিল বিভাগ শিগগিরই এ মামলাটি শুনবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নু ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ শুনানির সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছর সুপ্রিমকোর্টের ৯ আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতেই ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় গিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে বিচারপতি অপসারণের বিষয় নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন।
পঞ্চম সংশোধনী আদালত অবৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনলেও তখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
সেই পরিবর্তন আসে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে। তাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা ফিরে পায় সংসদ।
ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট হলে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তখনকার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের রায়ই বহাল থাকে।
ওই রায়ের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনেন সুপ্রিমকোর্ট।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ