হলি আর্টিজান

আপিলে ৭ জঙ্গির সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ড

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৩, ০১:০৩ পিএম

ঢাকা : সাড়ে সাত বছর আগে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত জঙ্গির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে হাইকোর্ট।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেয়।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুররহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, আব্দুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।

গত ১১ অক্টোবর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেছিল আদালত।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুনানির জন্য মামলাটি কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর ৩ মে থেকে শুনানি শুরু হয়। এর আগে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য এ বেঞ্চ ঠিক করে দেন প্রধান বিচারপতি। সেই অনুযায়ী তা কার্যতালিকায় আসে।

[209964]

বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে। পাঁচ তরুণ জঙ্গি রোজার ঈদের এক সপ্তাহ আগে পিস্তল, সাব মেশিনগান আর ধারালো অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়েছিল সেই রেস্তোরাঁয়।

তারা গলা কেটে ও গুলি চালিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে কমান্ডো অভিযানে ওই জঙ্গিদের হত্যা করা হয়।

ওই হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় রায়ে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায়ে সাতজনকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছিলেন। আরও দুটি ধারায় তাদের কয়েকজনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, আব্দুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।

মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়ে বিচারক তার রায়ে বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্য দিয়ে আসামিরা ‘জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ’ ঘটিয়েছে। সাজার ক্ষেত্রে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না।

অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা আসামি মিজানুর রহমানকে খালাস দেওয়া হয় রায়ে।

রায় ঘোষণার পর নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলার ডেথ রেফারেন্স ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত থেকে হাই কোর্টে আসে। হাই কোর্টের ডেসপাস (আদান-প্রদান) শাখা সেগুলো গ্রহণ করে পাঠায় ডেথ রেফারেন্স শাখায়।

পেপারবুক শাখা সেসব নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে নথিসহ রায়ের অনুলিপি ও আনুসঙ্গিক নথিপত্র পেপারবুক তৈরির জন্য ফেব্রুয়ারিতে বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেয়।

পাঁচ মাসের মাথায় ২০২০ সালের ১৮ অগাস্ট সে পেপারবুক বিজি প্রেস থেকে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা পড়ে। ততদিনে দেশ করোনাভাইরাস মহামারীর কবলে পড়ে। শুনানি শুরু হতে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়।

 

এমটিআই