ঢাকা: কোভিড -১৯ আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে কর্মরত শ্রমিকদের ওপর মারাত্বক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এটি কাজের ক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ যুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা -আইএলওকে এ অবস্থা মোকাবেলা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
শুক্রবার (০৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে আটটায় আইএলও এর ৩৪০ তম গভর্নিং বডির ভার্চুয়াল সভায় কোভিড -১৯ এন্ড ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সেশনে আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান।
করোনাকালীন এ অবস্থা থেকে সারা বিশ্বে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমজীবী মানুষ এবং অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় চারটি বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড-বায়ারদের নৈতিক ও দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করতে আইএলওর কে কাজ করতে হবে । তুলনামূলক দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে এগিয়ে নিতে বাজারে প্রবেশ অগ্রাধিকার দিতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকদের চাকরি ধরে রাখতে আইএলওর কাজ করতে হবে এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আইএলও'র শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর ঘোষণাপত্র উপলব্ধি করে জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসাথে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে শোভন কর্ম পরিবেশ নিশ্চতে ত্রিপক্ষীয় সামাজিক সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন।
করোনা সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রথম থেকেই বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয় যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকসহ ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব হ্রাস করার জন্য ৩১-দফা নির্দেশনা জারি করেছেন। সরকার পুনরুদ্ধার প্যাকেজ হিসেবে ১৩.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতনের জন্য প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন অংশীদাররাও আমাদের প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে বলে জানান।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় করোনা মোকাবিলায় তার মন্ত্রণালয়ের নেয়া পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের জন্য টেলিমেডিসিন সেবা চালু এবং আইএলও এর সহযোগিতায় কোভিড -১৯ প্রতিরোধে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি গাইডলাইন তৈরি করেছে। সংকট নিরীক্ষণের জন্য ২৩ টি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একশতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে আইএলওতে যোগদান এবং একদিনেই ২৯ টি আইএলও কনভেনশন অনুস্বাক্ষরের বিষয়টি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি সবাইকে নিয়ে শ্রম অধিকার সুনিশ্চিত করা এবং কোভিডমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ভার্চুয়াল সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং জেনেভাস্থ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি মো. মুস্তাফিজুর রহমান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দিনসহ মন্ত্রণালয় স্থায়ী মিশনের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ সংযুক্ত ছিলেন।
সোনালীনিউজ/এমএইচ