ঢাকা : শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত সোনালী পেপার এন্ড বোর্ড মিলস কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারের মাঝে সমাপ্ত অর্থবছরের (৩০ জুন ২০২০) বোনাস বিতরণ করেছে।
রোববার (১০ জানুয়ারি) সিডিবিএল সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। ইতোমধ্যে ঘোষিত বোনাস শেয়ারহোল্ডারের মধ্যে বিও অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর সোনালী পেপার এন্ড বোর্ড মিলস কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও বাকি ১০ শতাংশ বোনাস বিতরণ করার কথা জানিয়েছি।
ভার্চুয়াল ওই সভায় অংশগ্রহণ করেন কোম্পানির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোসা. মাহফুজা ইউনূছ, পরিচালক মোহাম্মদ জাবেদ নোমান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর কাজী আসলাম হোসাইন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর এ. কে. এম. নুরুল ফজল বাবলু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর অসিম কুমার রায় ভার্চুয়ালে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় কোম্পানির জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সহযোগিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনূছ বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে কোম্পানি বেশ কিছু ভালো উদ্যোগ হাতে নিলেও বিশ্বব্যাপি করোনা ভাইরাসের কারনে কোম্পানিটির মুনাফা কিছুটা কমেছে। নতুন করে অর্থনীতির চাকা সচল হওয়ায় আগামীতে সোনালী পেপারের আয় বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশাবাদি।
তিনি আরও বলেন, যদি শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির প্রতি তাদের সমর্থন এভাবেই অব্যাহত রাখেন তাহলে পরবর্তীতে আয় ও লভ্যাংশ অবশ্যই বাড়বে। সেদিকে নজর রাখবে পরিচালনা পর্ষদ।
এর আগে কোম্পানিটি ৩০জুন’ ২০২০ সমাপ্ত হিসাববছরে শেয়ার হোল্ডারদেরদের জন্য ৫ শতাংশ নগদ এবং ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
জানা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.৬১ টাকা। আর ২০২০ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩০৭.৮৮ টাকায়। গত অর্থবছরে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৩.৮৮ টাকা।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬৯ পয়সা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৬ পয়সা।
চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৮ টাকা ৫৮ পয়সা। যা ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৩০৭ টাকা ৮৮ পয়সা।
২০১৯ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ব্যবসায়িক সাফল্য ও সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন করায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে সম্প্রতি অনাপত্তি পত্র পাওয়ার পর সম্প্রতি দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মূল মার্কেটে লেনদেন শুরু হয় ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটের কোম্পানি সোনালি পেপারের।
বিএসইসির দেয়া উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠিতে বলা হয়, যে কোন দিন থেকে সোনালী পেপারের লেনদেন মূল মার্কেটে চালু করতে পারবে। তবে কোম্পানিটির পরিচালকদের সব শেয়ার এক বছরের জন্য লক-ইন থাকবে। লেনদেনের প্রথম দিন থেকে এই সময় ধরা হয়েছে।
এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সোনালী পেপারের শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩০ জুন,২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরে এনওসিএফপিএস যেখানে ৮০ পয়সা ছিল সেখানে ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরে এনওসিএফপিএস দাঁড়িয়েছে ১৪.৬৪ টাকা।
জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সোনালী পেপার দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কমিয়েছে ৭৭.৩০ শতাংশ এবং স্বল্প মেয়াদি ঋণ কমিয়েছে ৮.৬১ শতাংশ।
ওটিসিতে যাওয়ার প্রায় ১১ বছর পর সম্প্রতি আবার মূল মার্কেটে ফিরছে সোনালি পেপার। এর আগে ওয়াটা কেমিক্যাল ও আলিফ টেক্সটাইল ওটিসি থেকে স্টক এক্সচেঞ্জের মূল মার্কেটে পুনঃ তালিকাভুক্ত হয়েছে।
সোনালি পেপার ১৯৭৭ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে এবং ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ইউনুস গ্রুপ ২০০৬ সালে কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে। সোনালি পেপার প্রিন্টিং পেপারসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজ উৎপাদন করে। এর বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ৩৫ হাজার টন। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের শেয়ার রয়েছে ৬৯ দশমিক ৩ শতাংশ।
সোনালীনিউজ/এএস