ঢাকা: করোনার টিকা প্রয়োগের জন্য শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস লিমিটেডের কাছ থেকে ৩ কোটি ৩০ লাখ অটোডিজ অ্যাবল (এডি) সিরিঞ্জ কিনছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) এ লক্ষ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোম্পানিটকে একটি কার্যাদেশ দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রথম ধাপে কোম্পানিটি ৬৬ হাজার সিরিঞ্জ সরবরাহ করবে। বাকি সিরিঞ্জগুলো পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।
প্রথম লটের সিরিঞ্জ সরবরাহ করা হবে ৩১ জানুয়ারি। এরপর যথাক্রমে ২৮ ফেব্রুয়ারি, ৩০ মার্চ, ১৬ মে ও ২০ জুন তারিখে বাকী সিরিঞ্জগুলো সরবরাহ করা হবে।
জেএমআই'র কাছ থেকে সরকারের কেনা প্রতিটি ০.৫ সিসি বিশেষ ধরনের সিরিঞ্জ দাম ধরা হয়েছে ৫ টাকা ৪০ পয়সা। কোম্পানিটির কাছ থেকে মোট ১৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা মূল্যের সিরিঞ্জ কিনছে সরকার।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ভারতের সেরাম ইন্ডাস্ট্রির উৎপাদিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আবিস্কৃত টিকা কেনার জন্য চুক্তি করেছে। আজ রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ হাজার ২৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন কেনার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
এদিকে, আজ বিশেষ বিমানে করে দেশে এসে পৌঁছাছে বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দেয়া ভারত সরকারের উপহারের ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা। করোনার এইসব টিকা প্রয়োগের জন্য বিশেষায়িত সিরিঞ্জ প্রয়োজন। যা দেশে একমাত্র জেএমআই।
সম্প্রতি জেএমআই করোনা টিকা প্রয়োগের জন্য ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে দেড় কোটি এবং পাকিস্তানের সাথে ২৬ লাখ এডি সিরিঞ্জ রপ্তানির চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৃহৎ চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে বলে কোম্পানির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
জেএমআই গত চার বছর ধরে আমরা ৩০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। আগামী বছরগুলোর জন্য আরো বড় লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সমাপ্ত হিসাব বছরে (২০১৯-২০ অর্থবছর) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৩৫ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ৩ টাকা ১ পয়সা। ৩০ জুন ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১২১ টাকা ৬৬ পয়সা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট বিক্রয় হয়েছে ১৯৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা; যা গত অর্থবছরের চাইতে ২০ কোটি টাকা বেশি।
জেএমআই সিরিঞ্জ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করেছে বলেও জানান তিনি।
উপরোক্ত তথ্যগুলো গত ২৯ ডিসেম্বর কোম্পানিটির ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) জানানো হয়। সভায় আরো জানানো হয়েছে, করোনার কারণে কারখানা একদিনের জন্যেও বন্ধ রাখা হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটির ৫০ দশমিক ২৩ শতাংশের মালিকানায় রয়েছে জাপানের বিশ্বখ্যাত কোম্পানি নিপ্রো করপোরেশনের।
সোনালীনিউজ/ এএস/এমএইচ