‘বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে সরকার’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১, ১১:৫৫ এএম
ফাইল ফটো

ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ। শ্রমঘন দেশটিতে গার্মেন্টস শিল্পের পরই সম্ভাবনাময়খাত আইটি। একদিকে দেশিয় বাজারে আইটিখাতের বিভিন্ন পণ্যেও চাহিদা বাড়ছে। অপরদিকে রফতানিখাতেও তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। এসব বিষয় সামনে রেখে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে সরকার। আইটিখাতে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরের কর অব্যাহতি সুবিধা ঘোষনা করা হয়েছে। আইটিখাতে এখন উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের অপেক্ষায়।

সোমবার (২ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে ১০ দিনের রোড শো’র সমাপনী অনুষ্ঠানে দেশি বিদেশি অংশীজনদের বক্তব্যে এসব বিষয় উঠে আসে। সান্তা ক্লারার হায়াত রিজেন্সিতে অনুষ্ঠিত রোড শোর মূল বিষয় ছিল রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়াল ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের মেয়র লিসা এম গিলমোর। বাংলাদেশের পক্ষে বত্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সদস্য ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজ এসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহসান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পেগাসাস টেক ভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান এবং স্টার্ট আপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনা জাবিনসহ বেশ কয়েকজন দেশি বিদেশি উদ্যোক্তা।

লিসা এম গিলমোর বলেন, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও তথ্য প্রযুক্তিখাতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ও অর্থনৈতিক বিভিন্নখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে এই রোড শো দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে আইটিখাতের সম্ভাবনা বাড়ছে। আইটির ব্যবহারও বাড়ছে। বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারকারী ১৭ কোটি ৬০ লাখ। বিশেষ করে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আওতা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এছাড়াও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং স্টার্টআপ বীজনেসের মতো আইটি নির্ভরখাতের দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে। এ কারণে সরকার হাইটেক ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করেছে। আগামীতে এখাতের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যাপক সংখ্যক যুব উদ্যোক্তা এগিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা ও ধারনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা তুলে ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগ আর্কষণে যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ শহরে ১০দিনের রোড শোর আয়োজন করা হয়েছিল। এরমধ্যে রয়েছে নিউইর্য়ক, ওয়াশিংটন এবং লসএঞ্জেলেসে বাংলাদেশের আর্থিকখাতের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

সমাধনী দিনে সোমবার (২ আগস্ট) আইটিখাতের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর আয়োজন করেছে। অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বে সবচেয়ে প্রভাবশালী এই দেশটিতে বাংলাদেশকে তুলে ধরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এই আয়োজনের উদ্দেশ্য। বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকেও সাড়া মিলছে।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিবেশ বিনিয়োগ বান্ধব। বিশেষ রাজনৈতিক স্থিতিশীল, অর্থনৈতিক সক্ষমতা, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা, মুদ্রার বিনিময় হার, যুব শ্রমশক্তি এবং ইকো সিস্টেম সবকিছুই বিনিয়োগ উপযোগী। তিনি বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং স্টার্টআপ বীজনেসের সম্ভাবনা বাড়ছে। বিশেষ করে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের গ্রাহক দ্রুত গতিতে বেড়েছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগের এখনই উপযুক্ত সময়।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাপক বিনিয়োগ করছে বাংলাদেশ। বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অভ্যান্তরীণ বিশাল বাজার রয়েছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। কমমূল্যে শ্রমিক, বিদ্যুৎ, গ্য্সা এবং অন্যান্য সেবা মিলছে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশে^র প্রথম অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র। সে কারণে রফতানিতে বিভিন্ন দেশে উচ্চ শুল্ক দিতে হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ এক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ করলে চীন, ভারত, ইউরোপ ও জাপানের বাজার থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, তিনি বলেন, গত এক বছরে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আলোচ্য সময়ে এখাতে বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে। আর এসব সংস্কারের সুফল মিলছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচ