ঢাকা: সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে (১৬-১৯ আগস্ট) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলা এগ্রিাকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের। অন্যদিকে দর হারানোর শীর্ষে ছিল এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স।
ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, স্টক এক্সচেঞ্জটির লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২২৪টির বা ৫৯.২৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে।
আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১২.১০ টাকায়। আর বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ১৭.৬০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৫০ টাকা বা ৪৫.৪৫ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটের গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।
ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ২১.৩৭ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের ১৮.১৮ শতাংশ, এইচআর টেক্সটাইলের ১৭.৭১ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্নের ১৭.১৪ শতাংশ, জিবিবি পাওয়ারের ১৬.৯৪ শতাংশ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ১৬.৫৯ শতাংশ, রিং শাইনের ১৫.৭৯ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ১৫.৬৭ শতাংশ এবং স্টাইলক্রাফটের শেয়ার দর ১৪.৮৬ শতাংশ বেড়েছে।
জানা গেছে, আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এপোলো ইস্পাতের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৪.৭০ টাকায়। আর বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ১৩.৩০ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৪০ টাকা বা ৯.৫২ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে এপোলো ইস্পাত ডিএসইর সাপ্তাহিক টপটের লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।
ডিএসইতে সাপ্তাহিক টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোনালী পেপারের ৯.৪৯ শতাংশ, এমবি ফার্মার ৮.৪৪ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ৮.৩৩ শতাংশ, বেঙ্গল উইন্ডসোরের ৭.৬৪ শতাংশ, ফরচুন সুজের ৭.৪৭ শতাংশ, উসমানিয়া গ্লাসের ৬.৯৮ শতাংশ, জেমিনি সী ফুডের ৬.২৫ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মার ৫.৯৯ শতাংশ এবং গোল্ডেন হার্ভেস্টের শেয়ার দর ৫.৮৮ শতাংশ কমেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এর মধ্যে দুই কার্যদিবসই পতন হয়েছে। বাকি দুই কার্যদিবস উত্থান হলেও সপ্তাহ শেষে টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের সপ্তাহ থেকে কিছুটা কমেছে। সূচক বেড়েছে। একই সাথে বাজার মূলধন ১৮ শত কোটি টাকা ফিরেছে।
জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯২ হাজার টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭২১ কোটি ৬২ লাখ ৪ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীরা ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ১০ হাজার ৩১১ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৫ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৩৪২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৩১২ টাকা বা ৩.২১ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬১.২৩ পয়েন্ট বা ০.৯১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৬০.৬২ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২.৩০ পয়েন্ট বা ০.১৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে এক হাজার ৪৬১.৩৪ পয়েন্টে। তবে ডিএসই-৩০ সূচক ৪.০৩ পয়েন্ট বা ০.১৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪২৩.৫৫ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২২৪টির বা ৫৯.২৬ শতাংশের, কমেছে ১৪৩টির বা ৩৭.৮৩ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির বা ২.৯২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪০৭ কোটি ৩৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৬ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪০৮ কোটি ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৬২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১ কোটি ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৩১৬ টাকা কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৭.৮৫ পয়েন্ট বা ১.০১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৭১৩.২৪ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ১১৮.৪৬ পয়েন্ট বা ১.০১ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৮৫.৬০ পয়েন্ট বা ০.৫৯ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৯.৪৬ পয়েন্ট বা ০.৬৭ শতাংশ এবং সিএসআই ৯.০৮ পয়েন্ট বা ০.৭৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ৮২০.৫২ পয়েন্ট, ১৪ হাজার ৪৭৮.৩৯ পয়েন্টে, এক হাজার ৪২৭.৯০ পয়েন্টে এবং এক হাজর ২৪৭.০৪ পয়েন্টে।
সোনালীনিউজ/এলএ