ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন বিনিয়োগে সর্বোচ্চ রিটার্ন দিচ্ছে। সেজন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এককভাবে বা সমন্বিতভাবে বা বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বন্ডে বিনিয়োগ করলে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ রিটার্ন পাবেন। বাংলাদেশ সর্বোচ্চ রিটার্ন প্রদানকারী দেশ।’
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে রোড শো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া রোড শোতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, বিডা’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সাইদা মুনা তাসনিম উপস্থিত রয়েছেন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পুঁজিবাজার গতিশীল এবং আমরা এর ওপর অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি। একইসঙ্গে মুদ্রাবাজার বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে। এখন আমরা পুঁজিবাজারে নতুন নতুন পণ্য যুক্ত করছি। বিশেষ করে বন্ড আগামী দিনে একটি বড় চালিকা শক্তি। আমরা অনেক নতুন বন্ড ইস্যু করছি। যেমন- সুকুক বন্ড, পারপেচুয়াল বন্ড, সাবঅর্ডিনেড বন্ড। এছাড়া ঢাকার উত্তর সিটি করেপোরেশনের মেয়র রোড শোতে উপস্থিত আছেন। তিনি ঢাকাকে আরও সুন্দর ও সবুজ পরিবেশ গড়ে তুলতে নতুন মুনি বন্ড ছাড়বেন।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের পুঁজিবাজারে গত ৩০ বছরের অবস্থা রোড শোতে তুলে ধরা হয়েছে। আপনারা পুঁজিবাজারের উত্থান দেখতে পাচ্ছেন তা যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। বর্তমান বাজারের গতির অনেক ভাল। একইসঙ্গে বাজার মূলধনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা গত ১ বছর ৩ মাসের মধ্যে বাজার মূলধন ৪০ থেকে ৬৭ বিলিয়নে উন্নীত করেছি। আর এই কারণেই আমরা এখনও শীর্ষদের শীর্ষে আছি। আমরা শিগগিরই উদীয়মান শেয়ারবাজারে চলে যাচ্ছি। এশিয়া ফ্রন্টিয়ার ক্যাপিটাল (এএফসি) এখনও বলছে যে, আজ অবধি ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে শীর্ষ পারফর্মিং বাংলাদেশের সূচক রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বন্ড এবং সামান্য ইক্যুইটি বিনিয়োগ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে আমদের শুধুমাত্র জাতীয় রাজস্ব উৎসের উপর নির্ভর করা উচিৎ নয়। আমাদের অন্যান্য ব্যক্তিগত উৎস থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করতে হবে। এতে আমরা বাংলাদেশকে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে পারব। এসডিজি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের প্রতি বছর ৮৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাই এ লক্ষ্যমাত্র অর্জন করার জন্য কঠোর চেষ্টা করছি। এর জন্য এর জন্যও আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদার এবং বন্ধুদের প্রয়োজন।’
যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত রোড শোতে লন্ডনের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী এবং স্টেক হোল্ডাররা অংশ গ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে আগত অতিথিরা বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সরকারের গৃহীত বিনিয়োগবান্ধব নীতি, শেয়ারবাজার ও সার্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি এবং এফডিআই’র বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এমএইচ