ঢাকা : ক্যাপিটাল মার্কেটের সবচেয়ে বড় শক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমাদের মানি মার্কেট ও ক্যাপিটাল মার্কেটকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। মানি মার্কেট ও ক্যাপিটাল মার্কেটের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব না।
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) আয়োজিত ‘আউটকাম অব রেজাল্ট অরিয়েন্টেড আইসিটি ওয়ার্কসপ অ্যান্ড অ্যানুগ্রেশন অব গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ড (জিজেএমএফ) নামক প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বুধবার রাতে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। অনুষ্ঠানে কী নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মোহাম্মদ তারেক।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শেয়ারবাজারের কোনো বিষয় নিয়ে যখনই যাই, তিনি আন্তরিকতা নিয়ে সহযোগিতা করেন। আজ পর্যন্ত কোনো বিষয়ে খালি হাতে ফিরিয়ে দেননি। শেয়ারবাজারে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে অর্থমন্ত্রী এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ও আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য সহায়ক।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের মে মাসে আমরা দায়িত্বে আসি। আমাদের দায়িত্বের প্রথমেই অভিযোগ আসে বিনিয়োগকারীরা ডিভিডেন্ড পায় না। তাহলে ডিভিডেন্ড কোথায় যায়, এটা জানতে সবগুলো কোম্পানিকে চিঠি দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলো বলে ডিভিডেন্ড নেওয়ার জন্য সঠিক ঠিকানা পাওয়া যায় না। কিন্তু জানা যায় ডিভিডেন্ডগুলো কোম্পানিগুলোর কাছে রয়ে গেছে। যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
বিএসিসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, কোম্পানিগুলোর কাছে পড়ে থাকা এই ডিভিডেন্ডের টাকা দিয়ে আইসিবির কাস্টোডি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ফান্ড গঠন করা হয়। যার নাম ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড। এখন পর্যন্ত এই ফান্ডে ৫০০ কোটি টাকার মতো জমা পড়েছে।
এই টাকাটা সরকারের একটি সংস্থার কাছে রেখে যদি ব্যবহার করা যায়, তাহলে পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট কিছুটা দূর হবে।
এসময় অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ২০২০ সালের মে মাসে করোনা মহামারির সময় আমরা বিএসইসির দায়িত্ব নিয়েছি। তখন পুঁজিবাজার বন্ধ ছিলো। ইনডেক্স ছয় হাজার থেকে কমে অবস্থান করছিল ৩ হাজারের ঘরে। সেখান থেকে আমরা গুড গভর্ন্যান্সকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সুশাসনের প্রতি আস্থা নেই। মানুষ এ মার্কেটে আইনের যথাযথ প্রয়োগ দেখতে চায়। আমরা সেখান থেকেই কাজ শুরু করেছিলাম। যার ফলে ইনডেক্স এখন ৭ হাজার পয়েন্টে নিয়ে আসতে পেরেছি।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রসঙ্গে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ভারতে যেমন মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ রয়েছে, বাংলাদেশেও ঠিক সেভাবেই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যার ফলে তৈরী হয়েছে গোল্ডেন জুবিলি ফান্ড।
তিনি বলেন, এই ফান্ডকে পরিচালনার জন্য এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কখনোই কমবে না। এটা দিনে দিনে বাড়বে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিৎ এই ফান্ডে বিনিয়োগ করে ভালো রিটার্ণ নেওয়া। এই ফান্ডে থেকে বিনিয়োগকারীরা ডাবল গেইন পাবে বলে জানান তিনি।
শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, এই ফান্ড অনেক ভালো করবে। কারণ এই ফান্ডের পরিচালনায় যারা রয়েছেন, তারা সকলে খুবই দক্ষ ও অভিজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের চেয়্যারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম প্রমূখ।
সোনালীনিউজ/এমএইচ