বিদায়ী বছরে সর্বোচ্চ রিটার্ন সোনালী পেপারের শেয়ারে

  • মো. মেহেদী হাসান | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২২, ০৮:২৮ পিএম
ছবি: সোনালীনিউজ

ঢাকা: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৩৪৫টি কোম্পানির মধ্যে সদ্য বিদায়ী বছরে সর্বোচ্চ রিটার্ন বা বিনিয়োগের বিপরীতে আয় হয়েছে সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের শেয়ারে। কাগজ ও মুদ্রণ খাতের কোম্পানিটি বছরটিতে রিটার্ন দিয়েছে ৩২৪ শতাংশ।

এদিকে খাতভিত্তিক রিটার্নে বা বিনিয়োগের বিপরীতে আয়ের বিবেচনায় শীর্ষে উঠে এসেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাত। তালিকাভুক্ত ২১টি খাতের মধ্যে সামগ্রিক বিবেচনায় এ খাতের কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকারীরা সর্বোচ্চ ৯৭ দশমিক ৯ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছে। 

২০২১ সালের শেয়ারবাজার নিয়ে ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বছরের শুরু ও শেষের দিনের শেয়ারের বাজারমূল্য বিবেচনায় নিয়ে এ রিটার্ন হিসাব করা হয়েছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছরজুড়ে সোনালী পেপারের শেয়ার দর ২৭৩ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫৭ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। যার ফলে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা এ সময়ে ৩ গুনেরও বেশি রিটার্ন পেয়েছে। 

কাগজ ও মুদ্রণ খাতের অন্য পাঁচটি কোম্পানির মধ্যে চলতি বছরে ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরা কোম্পানি বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং ও পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার দর বছরজুড়ে বেড়েছে যথাক্রমে ৪ ও ২২ গুণ। 

তবে বসুন্ধরা পেপার মিলস, হাক্কানি পাল্প এবং খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ে শেয়ার দর বছরের শেষ প্রান্তে এসে কমে গেছে। বছরের মধ্যবর্তী সময়ে কোম্পানি ৩টির শেয়ারের মূল্য বাড়লেও তা ধরে রাখতে পারেনি শেষের দিকে।

খাত হিসেবে দেখা যায়, বছরজুড়ে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের ৬টি কোম্পানির ৩টির শেয়ার দর কমলেও অন্যদের বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এর ফলে গড় বিবেচনায় এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারদরের বিপরীতে রিটার্ন এসেছে সর্বোচ্চ। 

ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় উঠে আসা সেরা ১০ রিটার্নদাতা কোম্পানির তালিকায় সোনালী পেপারের পরেই রয়েছে ফরচুন সুজের নাম। কোম্পানিটি তাদের বিনিয়োগকারীদের সদ্য বিদায়ী বছরে ৩১৫ শতাংশ রিটার্ন দিয়ে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। 

তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এমারেল্ড অয়েল ২৮৪ শতাংশ, সেলভো কেমিক্যাল ২৫৮ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিস ২৩৭ শতাংশ, কাট্টালি টেক্সটাইল ২২৭ শতাংশ, আনোয়ার গালভানাইজিং ২২৩ শতাংশ, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল ২১৭ শতাংশ, বেকন ফার্মা ২১৭ শতাংশ এবং ঢাকা ডাইং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ২১৩ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে বিগত বছরে।

এদিকে খাত ভিত্তিক বিশ্লেষণে কাগজ ও মুদ্রণের পরেই সর্বোচ্চ রিটার্ন দিয়েছে ১৪টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি নিয়ে লেনদেন করা বিবিধ খাত। বিগত বছরজুড়ে এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীরা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮১ দশমিক এক শতাংশ রিটার্ন পেয়েছে। 

অন্যান্য খাতের মধ্যে ট্যানারি থেকে ৮০ দশমিক এক শতাংশ, আইটি থেকে ৫৬ দশমিক তিন শতাংশ, খাদ্য ৫১ দশমিক দুই শতাংশ, সিমেন্ট ৪৫ দশমিক তিন শতাংশ, সেবা ৪৪ দশমিক আট শতাংশ, বস্ত্র ৪১ দশমিক আট শতাংশ, সাধারণ বিমা ৩৭ দশমিক ছয় শতাংশ, জীবন বিমা ৩৪ শতাংশ, ব্যাংক ৩০ দশমিক ছয় শতাংশ, সিরামিক ২৯ দশমিক আট শতাংশ, এনবিএফআই ২২ দশমিক সাত শতাংশ, ওষুধ ২০ শতাংশ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ১৪ দশমিক সাত শতাংশ, প্রকৌশল ১৩ দশমিক দুই শতাংশ, টেলিকম খাত আট দশমিক আট শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড আট দশমিক সাত শতাংশ এবং ভ্রমণ খাত থেকে তিন দশমিক ৯ শতাংশ রির্টান পেয়েছে বিনিয়োগকারীরা। 

তবে খাত বিবেচনায় শুধুমাত্র পাট খাতের বিনিয়োগকারীরা লোকসানে শেষ করেছে বিগত বছরটি। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা আলোচিত বছরে ২৮ শতাংশ লোকসান গুনেছে। এ খাতে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি জুট স্পিনার্স, নদার্ন জুট ও সোনালী আঁশের শেয়ারদর বছর শেষে কমে গেছে। যদিও প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য বছরের মধ্যবর্তী সময়ে অনেক বেড়েছিল। কিন্তু বছরের শুরুতে থাকা শেয়ারদর শেষ পর্যন্ত থাকেনি। যে পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল, তার চেয়ে বেশি পরিমাণে কমে গেছে শেয়ারের বাজারমূল্য।

সোনালীনিউজ/এমএইচ